ঢাকার বিপক্ষে ভাইকিংসের জয়

নিজস্ব প্রতিবেদক:

শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৬ রান। রবি ফ্রাইলিঙ্কের ঝড়ে ১ বল আগেই সমীকরণটা মিলিয়ে নাটকীয় জয় পেয়েছে চিটাগং ভাইকিংস। ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে নিশ্চিত হারতে বসা ম্যাচে পেয়েছে তারা ৩ উইকেটের জয়।

মিরপুরে ব্যাট হাতে সাকিব খেলেছেন দলীয় সর্বোচ্চ ৩৪ রানের ইনিংস। তার ব্যাটে ভর দিয়েই নির্ধারিত ২০ ওভারে ঢাকা ৯ উইকেটে স্কোরে জমা করতে পারে ১৩৯ রান। এই স্কোরটাই কঠিন হয়ে গিয়েছিল ভাইকিংসের জন্য। যদিও শেষ ওভারে ফ্রাইলিঙ্কের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১ বল আগে ৭ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ভাইকিংস।

শেষ ৬ বলে ভাইকিংসের দরকার ছিল ১৬ রান। ঢাকার অধিনায়ক সাকিব বল তুলে দেন মোহর শেখের হাতে। তার প্রথম বল থেকে ১ রান নিয়ে সানজামুল ইসলাম স্ট্রাইক দেন ফ্রাইলিঙ্ককে। ভাইকিংসের আশার পালে হাওয়া লাগানো এই দক্ষিণ আফ্রিকান দ্বিতীয় বলে ছাক্কা হাঁকিয়ে জমিয়ে দেন ম্যাচ।

পরের বলে ২ রান নিয়ে স্ট্রাইক প্রান্তে যাওয়া ফ্রাইলিঙ্ক আবারও ছয় মারলে স্কোর হয় ‘লেভেল’। শেষ ২ বলে ভাইকিংসের জিততে দরকার তখন ১ রান। তবে ফ্রাইলিঙ্ক থামেননি, ছক্কা মেরেই নিশ্চিত করেছেন রোমাঞ্চকর জয়।

ব্যাট হাতে অসাধারণ ফ্রাইলিঙ্ক ১০ বলে ৩ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ২৫ রানে। তার ঝড়ের আগে ক্যামেরন ডেলপোর্টের ব্যাটে ভালো শুরু পেয়েছিল ভাইকিংস। ১২ বলে এই ওপেনার ৪ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় করেন ৩০ রান। ওয়ান ডাউনে নামা ইয়াসির আলী করেন ১৫ রান। অধিনায়ক মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে ২২ রান। দলীয় সর্বোচ্চ ৩৩ রান করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন মোসাদ্দেক হোসেন।

ব্যাটের পর বল হাতেও দুর্দান্ত ছিলেন সাকিব। ৪ ওভারে এক মেডেনে ১৬ রান দিয়ে ঢাকার অধিনায়কের শিকার ৪ উইকেট। চমৎকার বোলিংয়ের পরও হার সঙ্গী করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাকে ফ্রাইলিঙ্কের দানবীয় ইনিংসটিতে। ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে ফ্রাইলিঙ্কের হাতেই, যিনি আসল কাজ বোলিংয়ে ১৯ রানে পেয়েছেন ২ উইকেট।

বল হাতে দারুণ পারফর্ম করেছেন ক্যামেরন ডেলপোর্ট, রবি ফ্রাইলিঙ্ক ও আবু জায়েদ। তাদের চমৎকার বোলিংয়ের সামনে নির্ধারিত ২০ ওভারে ঢাকা ৯ উইকেটে করেছে ১৩৯ রান।

আরেকবার ফ্রাইলিঙ্কের ঝলক। দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার ৩ ওভারে মাত্র ১৯ রান খরচায় পেয়েছেন ২ উইকেট। তার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ঢাকা হারায় তাদের দুই ওপেনারকে। ইনিংসের তৃতীয় বলে রনি তালুকদারকে (০) ফিরিয়ে শুরু ফ্রাইলিঙ্কের উইকেট উদযাপন। ব্যাটে ঝড় তোলা সুনিল নারিনকে ফেরান তিনি ১৮ রানে।

এই পেসারের তৈরি করা ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে পরে সাফল্য পেয়েছেন আবু জায়েদ। বাংলাদেশি পেসার ২৭ রান দিয়ে পেয়েছেন হেইনো কুন (১৮) ও দারবিশ রাসূলির (০) উইকেট দুটি। তবে উইকেট সংখ্যায় তাদেরও ছাড়িয়ে গেছেন ডেলপোর্ট। এই স্পিনার ৪ ওভারে ২৫ রান খরচায় পেয়েছেন ৩ উইকেট।

ডেলপোর্টের বলেই প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় ঢাকার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক সাকিব আল হাসানকে। ঢাকা অধিনায়ক ৩৪ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় করেছেন ৩৪ রান। শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে সাকিবের সঙ্গে দলীয় স্কোর বাড়িয়ে নেওয়া নুরুল হাসানও শিকার ডেলপোর্টের। এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ১৮ বলে ৫ বাউন্ডারিতে করে যান ২৭ রান।

আন্দ্রে রাসেলকে ঝড় তুলতে দেননি খালেদ আহমেদ। এই পেসার মাত্র ১ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠিয়েছেন ক্যারিবিয়ান হার্ডহিটারকে। এরপরও ঢাকার রান অতদূর পর্যন্ত গিয়েছে শুভাগত হোমের ঝড়ে। শেষ দিকে তিনি ১৫ বলে খেলে যান ২৮ রানের ইনিংস, যাতে ছিল ৩ চারের সঙ্গে এক ছক্কার মার।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.