নিজস্ব প্রতিবেদক:
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে বকেয়া টাকা আদায়ের দাবিতে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়াম। সেইসঙ্গে দেশীয় শ্রমিকদের ৫ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। দেশীয় শ্রমিক ও চীনা শ্রমিকরা উৎপাদন ব্যবস্থায় অংশ না নেয়ায় খনি বন্ধসহ পাশের বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নতুন করে কয়লা উৎপাদন বন্ধ রয়েছে ১ মার্চ থেকে। এদিন থেকেই সদ্য নির্মাণ করা ১৩০৮ নম্বর কোল ফেস থেকে কয়লা উত্তোলনের কথা ছিল। এই প্রথম প্রায় ২০০ কোটি টাকা বকেয়া পাওনা পরিশোধের দাবিতে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়াম কয়লা উৎপাদন বন্ধ রেখেছে।
জানা গেছে, চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়াম বর্তমানে তৃতীয় দফা চুক্তির আওতায় ২০১৭ সালের ১১ আগস্ট থেকে কয়লা উত্তোলন করে আসছে। এর আগে দ্বিতীয় দফা চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট। ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসের উৎপাদন বিলের ১০ শতাংশ কর্তন করে বিল পরিশোধ করা হতো। ঠিকাদার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সময়মতো কয়লা উত্তোলন করলে চুক্তি মেয়াদ শেষের ৬ মাসের মধ্যে কেটে নেয়া টাকা ফেরত পাওয়ার কথা।
সূত্রমতে, দ্বিতীয় দফা চুক্তির আওতায় ৭২ মাসে ৫.৫ মিলিয়ন টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রায় ৬ মিলিয়ন টন কয়লা উৎপাদন করে। কিন্তু খনি কর্তৃপক্ষ দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারের বকেয়া পাওয়া পরিশোধে গড়িমসি করে আসছে।
এ অবস্থায় অর্থ সংকটে পড়ে এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়াম ১ মার্চ থেকে নতুন ১৩০৮ নম্বর কোল ফেস হতে কয়লা উত্তোলনের কথা থাকলেও উৎপাদনে যায়নি। এমনিতেই উৎপাদনশীল ১৩১৪ নম্বর কোল ফেসে মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ায় দেড় মাস ধরে কয়লা উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। কয়লা না থাকায় পার্শ্ববর্তী ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উৎপাদন অনেকাংশে কমে গেছে। এ অবস্থা চলমান থাকলে অচিরেই উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এ বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুর রহমান জানান, বকেয়া টাকার জন্য আলোচনা চলমান রয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে যাওয়ার জন্য উন্নয়নমূলক কাজ করছে। বাঙালি শ্রমিকদের বেতন না দেয়ার বিষয়ে তিনি জানান, ৫ তারিখে বেতন দেয়ার কথা থাকলেও তারা আগামী ২-১ দিনের মধ্যে বেতন পরিশোধ করবেন।
Be the first to comment