
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভারত থেকে বর্তমানে ১১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে বাংলাদেশ। আগামিতে ভারত থেকে আরো বিদ্যুৎ আমদানি করার পরিকল্পনা রয়েছে। ভারতের ভূমি ব্যবহার করে ভুটান ও নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি কার্যক্রম বহুদুর এগিয়েছে। এ ছাড়া ভারতের গ্যাস পাইপ লাইন ব্যবহার করে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি ও দেশটি থেকে তেল আমদানির কার্যক্রম চলছে।
একদিকে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি বাড়ছে। জ্বালানি আমদানি প্রকল্প চলমান। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত, আন্ত নদীসহ বেশ কিছু বিষয়ে বাংলাদেশের টানপোড়েন রয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সহযোগিতা বৃদ্ধিতে এসব অমিমাংসিত বিষয়ক বাইরে রাখার আহবান জানিয়েছেন দুই দেশের বিশেষজ্ঞরা। আজ শনিবার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ–ভারত জ্বালানি সহযোগিতা : নীতি, বিষয় এবং ঝোক’ শীর্ষক শিরোনামে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন করেন বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশন।
ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব ও বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির সাবেক হাইকমিশনার বর্তমানে দিল্লীর সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট মুচকুন্দ দুবে বলেন, আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে যা পাওয়া যায় তার প্রথম বিষয়ে থাকে এটির দাম কত হবে। কিন্তু জ্বালানির মত বিষয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো এটির নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা। বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের জ্বালানি ঘাটতির দেশ; এই দুই দেশকে যৌথভাবে ভাবতে হবে কিভাবে এটির মোকাবেল করা যায়।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপচার্য অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, ৩০ বছর ধরে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির কথা হলেও ভারত বাংলাদেশকে আস্থায় আনতে পারেনি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করেছে, এটি বিরাট সফলতা। ভারতের গ্যাস পাইপ লাইন ও এলএনজি টার্মিনাল থেকে বাংলাদেশ জ্বালানি পেতে পারে। এরকম দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কগুলোকে আরো মজবুত করতে হবে।
ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও নতুন দিল্লীর জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) ইমিরাটেস অধ্যাপক এস ডি মুনি বলেন, চীন এ অঞ্চলের একটি বাস্তব পরিস্থিতি। দেশটি এ অঞ্চলের অনেকের চেয়ে বহুদুর এগিয়ে আছে। এ অঞ্চলকে ঘিরে কোনো পরিকল্পনা করলে তা চীনকে বাদ রেখে করলে সেটি ভাল হবে না। বাংলাদেশ, চীন, মিয়ানমার ও ইন্ডিয়ার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বাড়াতে হবে। এটি জ্বালানি নিরাপত্তায় বড় ভূমিকা রাখবে বলেও তিনি মনে করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ–তত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম বলেন, বাংলাদেশের তেল–গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনকারি রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা বাপেক্সের প্রকৌশলীরা, এখানে টেকনোলোজিও নেই। ভারতের ওএনজিসি সে তুলনায় অনেক শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের সাগরভাগের তেল–গ্যাস উত্তোলনে ওএনজিসির সহায়তা নিতে পারে বাপেক্স।
আরো বক্তব্য দেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ও হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ওয়ালিউর রহমান, বুয়েটের অধ্যাপক এজাজ হোসেন, দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পুজা শর্মা, জেএনইউ–এর অধ্যাপক সঞ্জয় কে ভরদ্বজ, খন্দকার আবদুস সালেক, এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লা আমজাদ হোসেন প্রমুখ।
Be the first to comment