রাজশাহীতে অটোরিক্সা ও রাইসমিলে সোলার

নিউজ ডেস্ক :
বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে পরীক্ষামূলকভাবে সোলার চার্জিং সিস্টেমে সফলতা এসেছে রাজশাহীতে। সোলার চার্জিংয়ের মাধ্যমে এখন সাশ্রয়ীমূল্যে অটোরিক্সা চার্জ দেয়া যাচ্ছে। এতে ব্যাপক সাড়াও পড়েছে। ফলে একদিকে বিদ্যুতের কোন ব্যবহার হচ্ছে না অপরদিকে সাশ্রয়ীমূল্যে গ্রাহকরা পাচ্ছেন বিদ্যুতের মতোই সেবা। এতে বিদ্যুতের ঘটতি পূরণ করছে এই প্রকল্পটি। মডেল হিসেবে চালু হওয়া প্রকল্পটি সাধারণ মানুষের মনে আশা জাগাচ্ছে।

শুধু অটোরিক্সা চার্জিং নয়, সোলার সিস্টেমের মাধ্যমে এখন অটোরাইস মিলও চলছে রাজশাহীতে। এটিও পরীক্ষামূলক শুরু হলেও ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পৃষ্ঠপোষকতায় রাজশাহীর পবা ও গোদাগাড়ীতে গড়ে তোলা হয়েছে সোলার চার্জিং স্টেশন। সম্প্রতি সরেজমিন রাজশাহীর পবা উপজেলার দামকুড়া ও গোদাগাড়ীর চব্বিশ নগর এলাকায় গিয়ে এ দুটি সোলার সিস্টেমের সফলতার দৃশ্য দেখা গেছে। জেলার পবার দামকুড়ায় একটি বাড়ির ছাদে ২০০০ বর্গফুট এলাকায় ৩২০ ওয়াট পিক সম্পন্ন মোট ৬৬টি প্যানেল বসানো হয়েছে। যা থেকে প্রতিদিন গড়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ কিলোওয়াট। এ চার্জিং স্টেশনটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৪৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এটি নির্মাণে ব্যয় করলেও জমিদাতা চুক্তির মাধ্যমে লাভের অর্ধেক অংশ পাচ্ছেন। এতে সোলার চার্জিং থেকে অটোরিক্সা চার্জ দিয়ে গত তিনমাসে তিনি আয় করেছেন ১৯ হাজার টাকা। আগামীকে এ আয় আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পবা উপজেলার দামকুড়া বাজারে শফিকুল ইসলামের জমিতে রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি যৌথভাবে সোলার চার্জিং স্টেশন স্থাপন করেছে। এ স্টেশন থেকে প্রতিদিন ৭০ থেকে ৯০ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। এই বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হচ্ছে অটোরিক্সার ব্যাটারি রিচার্জের জন্য। প্রতিদিন ৫ থেকে ৬টি অটোরিক্সা রিচার্জ করা হচ্ছে এখান থেকে। আগামীতে এটির আওতা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ চার্জিং স্টেশন থেকে আগামীতে অন্তত ১৫টি অটোরিক্সা চার্জ দেয়া সম্ভব হবে। এছাড়া স্বল্প পরিসরে বাসা-বাড়ি ও ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সংযোগ দেয়া সম্ভব হবে।

রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম প্রকৌশলী এসএম মোজাম্মেল হক বলেন, গ্রীন এনার্জি উৎপাদনে এ প্রকল্প একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে। পরিবেশ সম্মত এ সিস্টেমে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় জাতীয় সঞ্চালন লাইনেও যোগ করা সম্ভব হবে। এটি সরকারের একটি পাইলট প্রকল্প বলেও জানান তিনি।
এ প্রকল্পের জমিদাতা দামকুড়া এলাকার শফিকুল ইসলাম বলেন, তার বাড়ির ছাদে সোলার সিস্টেম বসানো হয়েছে। আর একটি ঘরে ব্যাটারি রাখা হয়েছে। সারাদিন সূর্য্যরে আলোয় সোলারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে তা ব্যাটারিকে রিচার্জ করে। সেখান থেকে লাইনের মাধ্যমে অটোরিক্সায় চার্জ দেয়া হয়। তিনি জানান, সাধারণ বিদ্যুতে প্রতিটি অটোরিক্সা চার্জ দিকে ১৫০ টাকা নেয়া হলেও সোলার চার্জিংয়ের মাধ্যমে প্রতিটি অটোরিক্সা চার্জ দিতে মাত্র ১২০ টাকা লাগে। এতে একজন অটোরিক্সা চালকের শুধু চার্জিং থেকেই সাশ্রয় হচ্ছে ৩০ টাকা করে। এ কারণে অনেক অটোরিক্সা চালক সেখানে চার্জ করাতে চান। তবে উৎপাদন স্বল্পতার কারণে তা দেয়া হয় না। সোলার সিস্টেমের আওতা বৃদ্ধি হলে তখন বড় পরিসরে কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে।
এদিকে জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার চব্বিশ নগর এলাকায় ১০০০ বর্গফুট এলাকায় ৩২০ ওয়াট পিক সম্পন্ন ৩৭টি প্যানেল বসিয়ে গড় বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে এখন প্রতিদিন ৪০ থেকে ৪৫ কিলোওয়াট। এটিতে ব্যয় হয়েছে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এটিও পরীক্ষামূলকভাবে চালু করে সফলতা পেয়েছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.