বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।
ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল আয়োজিত ‘এনার্জি গোলটেবিল’ অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান।
একই সঙ্গে তিনি বেসরকারি খাতকে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কের মূল চালিকা শক্তি হিসেবে অভিহিত করেন।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য জানায়।
উপদেষ্টা তার বক্তব্যে বাংলাদেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে মার্কিন সংস্থাগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্বীকার করেন। এক্ষেত্রে তাদের আরও বেশি অবদান রাখার আহ্বান জানান।
তিনি দেশে তেল এবং গ্যাস অনুসন্ধানে বিশেষত অফশোর ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে তাদের উৎসাহিত করেন। উপদেষ্টা নিরবচ্ছিন্ন এবং সাশ্রয়ী মূল্যের নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎসের গবেষণা ও উন্নয়নে মার্কিন বেসরকারি খাতের সঙ্গে অংশীদার হওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের আগ্রহ ব্যক্ত করেন।
তিনি মার্কিন সংস্থাগুলোকে বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ মডুলার রিঅ্যাক্টরের সম্ভাবনা অনুসন্ধান করার আহ্বান জানান।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ তার প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে আঞ্চলিক বিদ্যুৎ বিতরণে নিবিড়ভাবে কাজ করছে এবং মার্কিন সংস্থাগুলো সেখানে বিনিয়োগের সুযোগগুলো অনুসন্ধান করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট নিশা বিসওয়াল গোলটেবিলে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানির চাহিদা পূরণে দু’দেশের জ্বালানি অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিতে তার সংস্থার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে স্বাগত বক্তব্য দেন। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে জ্বালানি সহযোগিতা সম্প্রসারণের জন্য বিজনেস কাউন্সিলের আসন্ন ‘এনার্জি টাস্কফোর্স’ একটি জ্ঞান-ভিত্তি তৈরি করতে সক্ষম হবে বলে উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।
গোলটেবিল আলোচনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম সহিদুল ইসলাম, শেভরন, চেনিয়ার, এক্সিলারেট এনার্জি, এক্সনমোবিল, জিই পাওয়ার, সানএডিসনসহ বেশ কয়েকটি মার্কিন সংস্থার সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট লেভেলের কর্মকর্তা এবং যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার, যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরুর পর এটি ছিল উক্ত কাউন্সিলের প্রথম ইন-পারসন সভা।
এর আগে জ্বালানি উপদেষ্টা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের জ্বালানি সম্পদ ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত সহকারী সচিব ও রাষ্ট্রদূত ভার্জিনিয়া ই পামারের সঙ্গে বাংলাদেশ-মার্কিন জ্বালানি সহযোগিতা বিষয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে রাষ্ট্রদূত পামার দু’দেশের জ্বালানি সহযোগিতা গভীরতর করার লক্ষ্যে বিশেষত: নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে তার সরকারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের জ্বালানি নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনকে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত পামার বাংলাদেশে ১০টি কয়লা চালিত পাওয়ার প্ল্যান্ট বাতিল করার সাম্প্রতিক পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
Be the first to comment