এলপিজি বিক্রি করতে ডিলারদের ইআরসি এর লাইসেন্স প্রয়োজন হবে

এলপিজি

রশিদ মামুন:
এলপিজি বিপণন করতে সারাদেশের ডিলারদের এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (ইআরসি) লাইসেন্স নিতে হবে। তবে এখনই খুচরা বিক্রেতাদের লাইসেন্স গ্রহণের প্রয়োজন হবে না। ইআরসি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ইআরসি আইন বলছে, ১০ টির অধিক এলপিজি বোতল রাখলেই লাইসেন্স প্রয়োজন হবে। তবে ১০টির কম বোতল রাখলে লাইসেন্স নেয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। আইনের সুযোগটি কাজে লাগিয়ে ইআরসি লাইসেন্স গ্রহণ না করেও ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।

সারাদেশে এলপিজির এমন ডিলার (ডিস্ট্রিবিউটর) সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। এদের কারো ইআরসি লাইসেন্স নেই। এছাড়া সারাদেশে প্রায় ৩৮ হাজার খুচরা এলপিজি বিক্রিতা রয়েছে। শহর থেকে গ্রামে এসব বিক্রেতারা এলপিজি বিক্রি করে।

এলপিজি বাণিজ্যের দিকে তাকালে দেখা যায় দেশে ১৯৭৮ সাল থেকে এলপিজি বিক্রি শুরু হয়। কিন্তু ওই সময় শুধু মাত্র সরকারি এলপিজি বাজারজাত করা হতো। দেশের একমাত্র তেল পরিশোধনাগার ইস্ট্রার্ন রিফাইনারি (ইআরএল) থেকে পাওয়া সামান্য পরিমান এলপিজি বাজারজাত করা হতো। পরবর্তীতে অবশ্য দেশীয় গ্যাসের উপজাত কনডেনসেট প্রক্রিয়া করেও এলপিজি পাওয়া যেত। জাতীয় জ্বালানি নীতি ১৯৯৬ তে বেসরকারি কোম্পানিকে এলপিজি বাজারজাত করার অনুমোদন দেয়া হয়। এখন দেশে ২৮টি বেসরকারি কোম্পানি এলপিজি বাজারজাত করছে। দেশে বার্ষিক এলপিজি মজুদ এবং সরবরাহ ক্ষমতা রয়েছে ২৪ লাখ ৮০ হাজার টন।

দেশে মোট ব্যবহৃত এলপিজির ৮৪ ভাগ গৃহস্থালিতে ব্যবহার করা হয়। বাকি এলপিজি পরিবহন এবং শিল্পে ব্যবহার করা হয়। এই এলপিজির আবার ৯৮ ভাগ বেসরকারি কোম্পানিগুলো যোগান দিচ্ছে। আর সরকারি কোম্পানি যোগান দিচ্ছে মাত্র দুই ভাগ।

দেশে গ্রাহকের কাছে এলপিজি পৌছানোর ক্ষেত্রে প্রথমে আমদানিকারকরা ডিস্টিবিউটরের গুদামে এলপিজি দিয়ে আসে। সেখান থেকে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে এলপিজি পৌছে দেয়া হয়।

দিন দিন দেশীয় গ্যাসের স্বল্পতার কারণে এলপিজি জনপ্রিয় হচ্ছে। ফলে এখন সরকার এলপিজি বাণিজ্যকে আইনী কাঠামোর মধ্যে আনার চেষ্টা করছে। এর ধারাবাহিকতায় এলপিজির দর নির্ধারণ হচ্ছে সরকারিভাবে।

এখন এলপিজির পরিবেশকদেরও আইনের অধীনে পরিচালনার চিন্তা করা হচ্ছে।

জানতে চাইলে ইআরসি’র সদস্য মকবুল ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, আমরা সব ডিস্টিবিউটরদের লাইসেন্স এর আওতায় আনার চিন্তা করছি। সকলকেই ইআরসির লাইসেন্স নিতে হবে। এজন্য কত খরচ হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন ক্রমেই পাঁচ হাজার টাকার বেশি খরচ হওয়ার কথা নয়।

ইআরসি একজন কর্মকর্তা বলেন, ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আরো কঠোর হবে তারা। ইআরসির লাইসেন্স ছাড়া যাতে কোন ডিস্টিবিউটর এলপিজি না পায় বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। তবে আপাতত এতটা কঠোর হচ্ছেন না তারা। ওই কর্মকর্তা বলেন, এখন অনলাইনে আবেদন করেই ইআরসি লাইসেন্স পাওয়া যায়। ফলে এটি জটিল কোন বিষয় হবে না। তিনি মনে করেন, লাইসেন্স থাকলে একজন উদ্যোক্তার কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। এতে অনেক ঝুঁকি কমবে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.