একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা-নাট্যকার ড. ইনামুল হক আর নেই। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা গেছেন।
আজ (১১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয় (ইন্নালিল্লাহি… রাজিউন)। মৃত্যুর খবরটি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন তার জামাই অভিনেতা সাজু খাদেম।
সাজু খাদেম বলেন, ‘বাবা সকালে বেশ সুস্থ ছিলেন। দুপুরে বাসায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নেওয়া হয়। বেলা ৩টার দিকে চিকিৎসকরা জানান, তিনি মারা গেছেন।’
তিনি জানান, সর্বস্তরের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনে ড. ইনামুল হকের মরদেহ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে নেওয়া হবে।
ড. ইনামুল হকের জন্ম ১৯৪৩ সালের ২৯ মে ফেনী জেলার মটবী এলাকায়। তার বাবা ওবায়দুল হক ও মা রাজিয়া খাতুন। ফেনী পাইলট হাইস্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকার নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি এবং পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ থেকে অনার্স ও এমএসসি সম্পন্ন করেন। মানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি পিএইচডি লাভ করেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি দীর্ঘ ৪৩ বছর শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। নটরডেম কলেজে পড়াকালেই তিনি প্রথম মঞ্চে অভিনয় করেন। ফাদার গাঙ্গুলীর নির্দেশনায় তিনি ‘ভাড়াটে চাই’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন।
১৯৬৮ সালে বুয়েট ক্যাম্পাসেই ‘নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়’র যাত্রা শুরু হয়। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন তিনি। এই দলের হয়ে প্রথম মঞ্চে অভিনয় করেন। নাটকটি ছিল আতাউর রহমানের নির্দেশনায় ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রো’। এরপর দলটির হয়ে ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’, ‘নূরুল দীনের সারা জীবন’সহ আরও বহু নাটকে অভিনয় করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি এই দল থেকে বের হয়ে প্রতিষ্ঠা করেন ‘নাগরিক নাট্যাঙ্গন’। নিজ দলের জন্য প্রথম লেখা নাটকের নাম ‘গৃহবাসী’। ১৯৮৩ সালে লেখা হয় নাটকটি। ঢাকার মঞ্চে বেশ আলোচিত নাটক এটি।
এ পর্যন্ত টেলিভিশনের জন্য ৬০টি নাটক লিখেছেন তিনি। তার লেখা আলোচিত টিভি নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘সেইসব দিনগুলি’ (মুক্তিযুদ্ধের নাটক), ‘নির্জন সৈকতে’ ও ‘কে বা আপন কে বা পর’।
গুণী এই অভিনেতার পুরো পরিবার নাটকে সম্পৃক্ত। তার স্ত্রী লাকী ইনামও কিংবদন্তি অভিনেত্রী। মেয়ে হৃদি হক নির্দেশক এবং অভিনেত্রী। তার জামাই অভিনেতা লিটু আনাম। ড. ইনামুলের অপর মেয়ে পৈত্রি হকের স্বামী সাজু খাদেম।
Be the first to comment