কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের ব্যবহার বন্ধের দাবি টিআইবির

টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রামপাল, মাতারবাড়ি, বাঁশখালীসহ বাংলাদেশে মোট ১৯টি বড় কয়লা ও এলএনজিভিত্তিক প্রকল্প প্যারিস চুক্তির পরিপন্থি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ ব্যবহার বন্ধসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার এবং প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে আসন্ন কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলন উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) টিআইবি আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। এ সময় সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, উপদেষ্টা পরিচালক (গবেষণা ও পলিসি) মোহাম্মদ রফিকুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রাক-শিল্পায়ন সময় থেকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য ১৯৬টি দেশ প্যারিস চুক্তিতে সম্মত হয়। কিন্তু প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রদত্ত অঙ্গীকার প্রতিপালনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও শুদ্ধাচার নিশ্চিতে ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। প্যারিস চুক্তির পর ছয় বছর অতিবাহিত হলেও দেশগুলো চুক্তি বাস্তবায়নের পথরেখা চ‚ড়ান্ত করতে পারেনি।
এতে বলা হয়, এরই মধ্যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ২ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু তাপমাত্রা বৃদ্ধি হ্রাসে সবচেয়ে বড় বাধা কার্বন নিঃসরণকারী কয়লাসহ জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার, রপ্তানি এবং এ খাতে বিশ্বব্যাপী অর্থায়ন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী শিল্পোন্নত দেশসমূহ প্রতিবছর ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রতিশ্রæত উন্নয়ন সহায়তার অতিরিক্ত নতুন ১০০ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু তহবিল দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ২০৫০ সালের মধ্যে ‘নেট-জিরো’ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, কয়লার ব্যবহার বন্ধ, প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়ন, বর্ধিত স্বচ্ছতা কাঠামো ও প্যারিস রুলবুক চ‚ড়ান্ত করাসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে এ বছর কপ-২৬ এ আলোচনা হবে। যুক্তরাজ্যের গøাসগোতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ জলবায়ু সম্মেলনকে প্যারিস চুক্তি পরবর্তী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু সম্মেলন হিসেবে বিবেচিত এবং সমঝোতায় পৌঁছানোর শেষ সুযোগ বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্যারিস চুক্তিতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঠেকাতে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার কমানোর কথা থাকলেও বাস্তবচিত্র উল্টো। উন্নত দেশগুলো ২০৩০ সাল নাগাদ জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদন ও ব্যবহার ১১০ ভাগ বাড়ানোর পরিকল্পনা, কয়লার উৎপাদন ২৪০ ভাগ, তেল ৫৭ ভাগ আর গ্যাস ৭১ ভাগ বাড়ানোর পরিকল্পনা, জি-২০ দেশগুলোর ৩০০ বিলিয়ন ডলারের নতুন তহবিল জীবাশ্ম খাতে অর্থায়ন করার পরিকল্পনা, রামপাল, মাতারবাড়ি, বাঁশখালীসহ বাংলাদেশে মোট ১৯টি বড় কয়লা ও এলএনজিভিত্তিক প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত; প্রকল্পগুলোর একটি বড় অংশ জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা উপক‚লীয় জেলায় নির্মাণ, প্যারিস চুক্তিকে পাশ কাটিয়ে জাপান, চীন ও কোরিয়াসহ বিশ্বের উন্নত দেশসমূহের এই প্রকল্পগুলোতে অর্থায়ন ও কারিগরি সহায়তা প্রদানে উদ্বেগ প্রকাশ করে টিআইবি। এসব বন্ধে ১৪টি সুপারিশ তুলে ধরে করে সংস্থাটি।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.