নিজস্ব প্রতিবেদক :
জ্বালানি তেলের পর এবার বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সারের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই তিন পণ্যের দাম সমন্বয় বা বৃদ্ধি করা না হলে বাজেটে ভর্তুকি ব্যয় অনেক বেড়ে যাবে। যার পরিমাণ হতে পারে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ২ শতাংশ। ফলে টাকার অঙ্কে ভর্তুকি ব্যয় বাজেটে প্রক্ষেপণের চেয়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই সরকারের উচিত ২০২২ সালের শুরুতে এসবের দাম সমন্বয় করা। অন্ততপক্ষে, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম দ্রুত বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
আজ বুধবার (২২ ডিসেম্বর) অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ‘বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ কমিটি’র বৈঠকে অর্থ বিভাগ থেকে দাম সমন্বয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, সবার সাথে আলোচনা করে এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্তে আসা হবে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও ঋণ বাবদ ৪৯ হাজার কোটি টাকা নির্ধারিত রয়েছে।
বৈঠকে বলা হয়েছে, দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভালো অবস্থায় রয়েছে। রেমিট্যান্স ছাড়া, আমদানি, রফতানি, এডিপি বাস্তবায়ন ও রাজস্ব আদায়ের হার ভালো রয়েছে। কিন্তু চিন্তায় ফেলে দিয়েছে সার্বিক ভর্তুকি ব্যয়। এই ভর্তুকি কমানোর জন্য বিদ্যুৎ, সার ও গ্যাসের দাম সমন্বয় (বৃদ্ধি) করার প্রয়োজন রয়েছে। তা না হলে বাজেটের ওপর চাপ বেড়ে যাবে। আর্থিক খাত একটি বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়তে পারে। তাই সারের দাম না হলেও গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম যেন আগামী বছরের শুরুতেই সমন্বয় করা হয়।
সূত্র জানায়, এ সময় অর্থমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দাম সমন্বয় করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ আলোচনার প্রয়োজন হবে। তবে এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত দ্রুতই নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়। সে সময় আবাসিক খাতে দুই চুলার খরচ ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৭৫ টাকা আর এক চুলার খরচ ৭৫০ টাকা থেকে ৯২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গৃহস্থালি মিটারে দাম বেড়েছে প্রতি ঘনমিটারে ৯.১০ টাকা থেকে ১২.৬০ টাকা। সিএনজির ক্ষেত্রে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৩ টাকা করা হয়েছে। এতে দাম বেড়েছে ৭.৫ শতাংশ।
এ ছাড়া বিদ্যুৎ ও সার উৎপাদনের জন্য, হোটেল ও রেস্তোরাঁ, ক্যাপটিভ পাওয়ার, শিল্প ও চা বাগানে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গড়ে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৭.৩৮ টাকা থেকে ২.৪২ টাকা বাড়িয়ে ৯.৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গড়ে দাম বেড়েছে ৩২.০৮ শতাংশ।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। এ সময় গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ে ৫.৩ শতাংশ।
Be the first to comment