৭০ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকির ফাঁদে জ্বালানিখাত

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়

রশিদ মামুন:
বিদ্যুৎ গ্যাস এবং সারে ৭০ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি প্রয়োজন। জ্বালানি বিভাগের এক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। ইতিহাসের সব চাইতে বড় ভর্তুকির বিপরীতে চলতি অর্থবছরের বাজেটে মাত্র সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
মূলত দেশে আমদানি করা গ্যাস নির্ভরতা বৃদ্ধি পাওয়াতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি প্রয়োজন হবে বলে জানা গেছে। তবে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকির সংস্থান কি করে হবে সে বিষয়ে কোন আলোচনা হয়নি। জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে এটি সমন্বয় করা যেতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর সারাদেশে এ নিয়ে হইচই শুরু হয়। এরমধ্যে গ্যসের দাম বৃদ্ধির ফলে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। ফলে বিদ্যুতের দামও বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে শিল্পের গ্যাসের দাম বাড়লে পণ্যের দাম বাড়বে। ফলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে।
সূত্র বলছে, বছরের শেষ দিকে খোলা বাজারে এলএনজির দাম বেড়ে যাওয়াতে সংকটে পড়েছে জ্বালানিখাত। খোলা বাজার থেকে এলএনজি আনতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ লোকসান গুনতে হচ্ছে পেট্রোবাংলাকে। এজন্য বিদ্যুৎ, সার এবং গ্যাসে কি পরিমাণ ভর্তুকি প্রয়োজন তা আলাদা করে নির্ধারণের নির্দেশ দেয়া হয়।
জ্বালানি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশের পর তিনখাতে পৃথকভাবে ভর্তুকি চিহ্নিত করে ৭০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, চলতি বছর জ্বালানিখাতে চার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকির জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। কিন্তু এখন অবধি ২ হাজার কোটি টাকা ছাড় করা হয়েছে। এর পর যে এলএনজি কার্গো আসবে তার জন্য ১৬০০ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে।
পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বলেন, গত নভেম্বরে আমরা অর্থবিভাগের কাছে ৯ হাজার ৩৩১ কোটি টাকার ভর্তুকি বাবদ চেয়েছি। কিন্তু এখন অবধি মাত্র এক হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি হিসেবে পাওয়া গেছে। তিনি শিল্প এবং বিদ্যুৎ উপাদনে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছেন জ্বালানি বিভাগের গত ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায়। ওই বৈঠকে চেয়ারম্যান বলেন, বিদ্যুৎ এবং শিল্পখাতে গ্যাসের মূল্য পুণঃনির্ধারণ করতে পারলে বিষয়টি অনেকটা সমাধান সম্ভব।
গত ২৮ ডিসেম্বর জ্বালানি সচিব আনিছুর রহমান (বর্তমানে অবসর উত্তর ছুটিতে রয়েছেন) স্বাক্ষরিত একটি কার্যপত্রে বলা হয়েছে, অর্থ বিভাগ থেকে ভর্তুকির অর্থছাড়ের চেষ্টা করতে হবে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.