বাপা ও বেন’র উদ্যোগে জ্বালানি ও জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের জ্বালানি খাতের দ্রুত বিকাশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সংশ্লিষ্ট নানা সমস্যা ও প্রশ্ন। এসব সমস্যা ও প্রশ্নের সামগ্রিক আলোচনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন)-এর যৌথ উদ্যোগে ‘জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই উন্নয়ন’ শীর্ষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাপা ও বেম এর পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানানো হয়। এতে সম্মেলনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, আয়োজন, ব্যবস্থাপনা, আলোচ্য বিষয়, উপস্থাপনা ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরা হয়।

সংবাদ সন্মেলনে জানানো হয়, আগামী ১১-১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসে বার্ষিক এ সম্মেলন হবে। সম্মেলনটি সরাসরি ও ভার্চুয়াল উভয় পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে। এতে দেশ-বিদেশের বিজ্ঞানী ও গবেষকবৃন্দ প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে বাপার সহ-সভাপতি ও বেনের প্রতিষ্ঠাতা ড. নজরুল ইসলাম বলেন, জ্বালানি দেশের অর্থনীতির একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। দেশের উন্নয়নের জন্য এই খাতের বিকাশ অপরিহার্য হলেও কী ধরনের জ্বালানি কতটুকু আহরিত ও ব্যবহৃত হবে তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জলবায়ু পরিবর্তনের আলোকে এই গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী উষ্ণতাবৃদ্ধিকারক গ্যাস (GHG) উদগীরণের একটি বড় উৎস হলো জ্বালানি। বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের ভূমিকা পালন করে। এককথায় যথেষ্ট সুচিন্তিতভাবে দেশের জ্বালানি কৌশল নির্ধারিত হওয়া প্রয়োজন, নতুবা তা স্থায়িত্বশীল উন্নয়নকে বিঘ্নিত করতে পারে।

বাংলাদেশের জ্বালানিখাতের বিকাশ দ্রুত ঘটেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং বিদ্যুতায়নের ক্ষেত্রে সংকটপর্ব অতিক্রম করে একটি নতুন পর্বে উপনীত হয়েছে। তবে এই নতুন পর্বে দেখা দিয়েছে নতুন ধরনের সমস্যা এবং প্রশ্নের। এসব প্রশ্নের একটি সামগ্রিক আলোচনাই এবারের বার্ষিক সম্মেলনের লক্ষ্য।

সম্মেলনে নিম্নোক্ত ১২টি বিষয়ের উপর প্রবন্ধ আহ্বান করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর উপরে ৫০টির বেশি প্রবন্ধ সম্মেলনে উপস্থাপিত হবে বলে জানান ড. নজরুল ইসলাম।

বিষয়গুলো হলো—

জ্বালানি-মিশ্রণ
জ্বালানি সরবরাহের সঙ্গে চাহিদার সমন্বয়
জ্বালানির বিকাশ এবং সরবরাহের ক্ষেত্রে দেশীয় বনাম বিদেশি সূত্র এবং সংস্থার ভূমিকা
জ্বালানির বিকাশ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারি বনাম বেসরকারি খাতের ভূমিকা
বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের আকার
বিদ্যুৎ উৎপাদনের স্থান
জ্বালানি সরবরাহের পন্থা
জ্বালানি উন্নয়ন ধারার আর্থিক স্থায়িত্ব-শীলতা
জ্বালানি উন্নয়ন ধারার পরিবেশগত স্থায়িত্ব-শীলতা
জ্বালানি উন্নয়ন ধারার ঝুঁকি-মাত্রা
সনাতনি জ্বালানির ভবিষ্যত
জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ, পানি-খাদ্য-জলবায়ু এবং স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের অন্যান্য ইস্যু

ভুল ও দুর্বল নীতির কারণে দেশের পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে উল্লেখ করে মিডিয়া ও পাবলিসিটি বিষয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, দেশের জ্বালানি খাতকে প্রাধান্য দিতে গিয়েই মূলত এ ১২টি বিষয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। ভুল ও দুর্বল নীতি দূর করে বিকল্প উপায় অবলম্বন করে দেশের পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

সম্মেলনের সহ-আয়োজক এবং সহযোগী আয়োজক হিসেবে রয়েছে দেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.