নিজস্ব প্রতিবেদক :
সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যবহার কমিয়ে আরও বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। এর আগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে একাধিক আদেশ-নির্দেশ জারি হয়েছে। এবার সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মঘণ্টা কমিয়ে নতুন অফিস সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে জরুরি পরিষেবার অফিসগুলো এ আদেশের বাইরে থাকবে।
আগামীকাল বুধবার থেকে সকাল ৮টায় সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর অফিস সময় শুরু হবে। শেষ হবে বিকেল ৩টায়। এর মাধ্যমে সকালবেলা এক ঘণ্টা এগিয়ে অফিস শুরু হলেও মোট কর্মসময় এক ঘণ্টা কমে এলো। অর্থাৎ বুধবার থেকে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দৈনিক আট ঘণ্টার বদলে সাত ঘণ্টা অফিস করবেন। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুক্রবারের সঙ্গে শনিবারও বন্ধ থাকবে বলে পৃথক প্রজ্ঞাপন করে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। তবে এ প্রতিবেদন পাওয়া পর্যন্ত কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত কোনো আদেশের তথ্য জানা যায়নি। সরকারের পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত এসব নিয়ম চলবে। তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মঘণ্টা বিষয়ে সরকার থেকে কোনো সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হচ্ছে না। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সংশ্নিষ্ট মন্ত্রীরা ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দেন। গতকালের বৈঠকে তিনটি আইন ও একটি নীতির খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের বরাত দিয়ে জানান, বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনাকে আরও কীভাবে কার্যকরভাবে কাজে লাগানো যায়, সে লক্ষ্যে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, বুধবার থেকে সব সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত অফিস সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত হবে। বেসরকারি অফিসের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। এ বিষয়ে মন্ত্রিসভায় কোনো আলোচনা হয়নি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সরকারি অফিসে কোথাও পর্দা টাঙানো থাকবে না। পর্দা তুলে রেখে যথাসম্ভব দিনের আলো কাজে লাগাতে হবে। এসি ব্যবহার যতটা না করলেই নয়, সেই পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সংশ্নিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর মিটিংয়ে ছিলেন। সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লেনদেন ও কর্মঘণ্টার কী হবে- তা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জানানো হবে।
সরকারের নতুন এসব সিদ্ধান্তে কী ধরনের সুবিধা হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, একদিকে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে, অন্যদিকে ট্রাফিক জ্যাম কমবে বলে মনে করে সরকার। কিন্তু কী পরিমাণ বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে- সে বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারেননি মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
মন্ত্রিসভা বৈঠকের ব্রিফিংয়ের পরপরই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে নতুন অফিস সময়-সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অফিস সময় হবে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। সাপ্তাহিক ছুটি যথারীতি শুক্র ও শনিবার। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ কার্যকর থাকবে বলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-৪ শাখার উপসচিব মেহেদী-উল শহীদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ব্যাংক লেনদেন ৯টা থেকে ৩টা: ব্যাংক লেনদেন শুরু ও শেষের সময় এক ঘণ্টা এগিয়ে ৯টা থেকে ৩টা করা হয়েছে। আর লেনদেন-পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে বিকেল ৫টার মধ্যে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অফিস ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। এত দিন সকাল ১০টা থেকে ৪টা পর্যন্ত লেনদেন এবং ৬টা পর্যন্ত অফিস সময় ছিল। এ ছাড়া বন্দর এলাকায় ব্যাংকের শাখা, উপ-শাখা বা বুথ সার্বক্ষণিক খোলা রাখার নির্দেশনা আগের মতোই অপরিবর্তিত থাকবে।
Be the first to comment