বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে কোনো গ্যাস পাইপ লাইন নেই

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ থেকে ভারতের মধ্যে কোন গ্যাস পাইপ লাইন নেই। অর্থাৎ ভারতে এবং বাংলাদেশের কোন দেশই কাউকে গ্যাস সরবরাহ করে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতকে দেয়া গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন করার দাবি সংগ্রান্ত প্রপাগান্ডাকে কেন্দ্রে করে
আজ বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এক খবর বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশ থেকে কোনো প্রকার প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারতে রপ্তানি হয় না।
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস রপ্তানি করা হতো মর্মে গত ২৫ আগস্ট থেকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরো বলা হচ্ছে, পূর্বের আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক ভারতে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস রপ্তানি করা হতো, কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে এ সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশ থেকে সরবরাহ করা গ্যাস লাইনের সংযোগও বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। একই দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।
ভারতে থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ আমদানি করে। প্রতিদিন এই আমদানির পরিমান হতে পারে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৭৬০ মেগাওয়াট। ভারতের সরকারি বিদ্যু কেন্দ্র থেকে ৪১০ মেগাওয়াট এবং বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাকি বিদ্যুৎ আমদানি করা হয়। এরমধ্যে ভারতের গোড্ডায় একটি ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছে আদানি শিল্পগোষ্ঠি। যার পুরো বিদ্যুৎ এখন অবধি বাংলাদেশেই রপ্তানি করা হয়।
এর বাইরে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে বাংলাদেশের কয়েকটি বেসরকারি কোম্পানি এলপিজি বিক্রি করে। তবে কেবলমাত্র তৃতীয় কোন দেশ থেকে আমদানি করেই বেসরকারি কোম্পানিগুলো এই এলপিজি বিক্রি করে। এরসঙ্গে বাংলাদেশের গ্যাস খাতের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
এছাড়া ভারতের একটি বেসরকারি কোম্পানি বাংলাদেশে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) বিক্রি করার প্রস্তাব দিয়েছিলো। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এই আলোচনা চলে আসলেও তা পূর্ণতা পায়নি। মূলত এলএনজি সঞ্চালনের জন্য পাইপ লাইন নির্মাণের দরপত্রে এইচ এনার্জি প্রতি কিলোমিটারের নির্মাণ ব্যয় এক ডলার নির্ধারণ করে দরপ্রস্তাব দিয়েছিল। দেশটির উচ্চ আদালতে বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করে অন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। উচ্চ আদালত অস্বাভাবিক কম দরে প্রস্তাব দেয়ার প্রেক্ষিতে পাইপ লাইন স্থাপনের প্রস্তাবটি বাতিল করে। এতে করে বাংলাদেশে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করার এইচ এনার্জির প্রকল্পটি ভেস্তে যায়। যদিও বাংলাদেশ এইচ এনার্জির এই প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে খুলনায় ৮০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করে বিপাকে পড়েছে। এখন কেন্দ্রটির গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না পেট্রোবাংলা।
তবে ভারত থেকে বছরে ১০ লাখ টন জ্বালানি তেল আমদানি করে বাংলাদেশ। পাইপ লাইনের মাধ্যমে ভারতের নোমালিগড় তেল পরিশোধনাগার থেকে এই তেল আমদানি করা হয়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.