নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিদ্যুৎখাত বিষয়ে বিগত সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। খুলনায় রূপসা ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোকে পুনর্গঠন করতে চাই। বিদ্যুৎখাতে অনিয়মের কাঠামো ভেঙ্গে দিতে চাই। এখাতে ঘটা অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করা হবে। মনে রাখতে হবে এটা একটি নতুন বাংলাদেশ। এখানে সবার সমান সুযোগ। সংকট যেমন আছে সমাধানও তেমন আছে।
উপদেষ্টা বলেন, এতদিন আমাদের দেশে একটি উন্নয়নের কাহিনী পড়া হচ্ছিল যে, বাংলাদেশে আমাদের মাথাপিছু আয় ও জিডিপি বাড়ছে এবং আমরা নিন্মআয়ের দেশ থকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছি। এখন দেখা যাচ্ছে এটা একটা ভ্রান্তি। খুলনায় প্রায় আট হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পাওয়ার প্ল্যান্ট হয়েছে, যা জাতীয় জিডিপিতে যুক্ত হয়েছে। জিডিপি বাড়লেও গ্যাসভিত্তিক এ পাওয়ার প্ল্যান্ট সহসা বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। আমরা তো অনেক আগে থেকেই জানতাম বাংলাদেশে গ্যাসের রিজার্ভ কমে যাবে, এখান থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হবে না। বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে আট হাজার কোটি টাকা খরচ হলো কিন্তু মানুষ এটা থেকে কোন উপকার পাচ্ছে না। এটাই হলো উন্নয়নের ভ্রান্তি।
উপদেষ্টা আরও বলেন, মানুষের জীবনের কী উন্নতি হয়েছে তা দিয়ে উন্নয়নকে পরিমাপ করতে হবে। খুলনার এই পাওয়ার প্লাটের নিকটে কেবল ভোলাতে গ্যাস আছে যা অপর্যাপ্ত। এখানে প্রয়োজন ১৪০ এমএমসিএফ গ্যাস কিন্তু ভোলাতে অতিরিক্ত আছে কেবল একশত এমএমসিএফ গ্যাস। তিন বছর সময় নিয়ে নতুন পাইপলাইন করে এ গ্যাস খুলনায় আনলেও সেটা পর্যাপ্ত হবে না। তবুও এ পাওয়ার প্ল্যান্টেকে কিভাবে আংশিকভাবে সচল করা যায় সে বিষয়ে ভাবা হচ্ছে।
সভায় বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ হাবিবুর রহমান, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোঃ নূরুল আলম, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ রেজাউল করিম, খুলনার জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ ইউসুপ আলীসহ বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতের কর্মকর্তার উপস্থিত ছিলেন।
দুপুরে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় সুশীল সমাজ, ছাত্র সমন্বয়ক, প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তি ও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় উপদেষ্টা অংশগ্রহণকারীদের পরামর্শ ও অভিযোগসমূহ মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং সমাধানের আশ্বাস দেন।
Be the first to comment