রংপুর রাইডার্সের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ চিটাগং ভাইকিংসের

নিউজ ডেস্ক:
১২০ বলে করতে হবে ২৪০ রান। বলের তুলনায় রান দ্বিগুণ। এই রান পাহাড়ে চাপা পড়া চিটাগং ভাইকিংস সামান্য সম্ভাবনাও জাগাতে পারেনি। রংপুর রাইডার্সের সামনে করতে হয়েছে অসহায় আত্মসমর্পণ। অ্যালেক্স হেলস ও রাইসি রোসোর সেঞ্চুরিতে রংপুর পেয়েছে ৭২ রানের দাপুটে জয়।

প্রথম ইনিংসের পরই একরকম নিশ্চিত হয়ে যায় রংপুরের জয়! হেলস (১০০) ও রোসোর (১০০*) শতকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে স্কোরে যখন ২৩৯ রান ওঠে, তখন রংপুরের পক্ষে বাজি ধরাটা মোটেও অস্বাভাবিক নয়। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তাই, কঠিন লক্ষ্যে খেলতে নেমে চিটাগং নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে করতে পেরেছে ১৬৭ রান।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে রান পাহাড় টপকাতে দুর্দান্ত শুরু দরকার ছিল চিটাগংয়ের। মোহাম্মদ শাহজাদ ও ইয়াসির শাহ অবশ্য শুরু করেছিলেন ঝড়ো গতিতে। যদিও শাহজাদের ঝড় বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি, ১২ বলে এই আফগান উইকেটরক্ষক করেন ২০ রান। ধাক্কাটা আরও বড় লাগে ওয়ান ডাউনে নামা সিকান্দার রাজা ৩ রানে ফিরলে।

অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম এক ওভারে তিন ছক্কা হাঁকিয়ে দর্শকদের আনন্দ দিলেও তা স্থায়ী হয়নি। ১১ বলে ২২ রান করে তিনি ফেরেন প্যাভিলিয়নে। তবে ওপেনিংয়ে নেমে একপ্রান্ত আগলে রেখে চমৎকার ইনিংস খেলেছেন ইয়াসির। মাশরাফির বলে আউট হওয়ার আগে ৪৮ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় খেলে যান ৭৮ রানের ঝড়ো ইনিংস।

তাতে অবশ্য কেবল হারের ব্যবধানই কমাতে পেরেছে চিটাগং। রংপুরের বিশাল সংগ্রহের পেছনে ছুটতে গিয়ে নাজিবুল্লাহ জারদান (১) ও মোসাদ্দেক হোসেন (১৪) করতে পারেননি কিছুই। তাতে চিটাগংকে উড়িয়ে রংপুর পেয়েছে দাপুটে জয়।

রংপুরের সবচেয়ে সফল বোলার অধিনায়ক মাশরাফি। ৩৪ রান দিয়ে এই পেসারের শিকার ৩ উইকেট। ২টি উইকেট পেয়েছেন ফরহাদ রেজা। দুই সেঞ্চুরির ম্যাচে রোসোকে টপকে সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন হেলস।

এক ইনিংসেই সেঞ্চুরি পূরণ করেন অ্যালেক্স হেলস (১০০) ও রাইলি রোসো (১০০*)। তাদের ঝড়ো শতকে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ৪ উইকেটে রংপুর রাইডার্স করে রেকর্ড ২৩৯ রান।

চিটাগং বোলারদের ওপর আক্ষরিক অর্থেই ঝড় তুলেছিলেন হেলস-রোসো। চার-ছক্কার ফুলঝুড়িতে টি-টোয়েন্টির আসল স্বাদ উপহার দিয়েছেন এই দুই ক্রিকেটার। তাদের পাওয়ার হিটিংয়ের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছেন চিটাগং বোলাররা। ক্রিস গেইল ২ রানে আউট হওয়ার পর হেলস-রোসোর তাণ্ডবে এলোমেলো মুশফিকুর রহিমরা।

আগের ম্যাচে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে করেছিলেন ৫৫ রান। বিপিএলে নিজেকে খুঁজে পাওয়া হেলস চিটাগংয়ের বিপক্ষে হাফসেঞ্চুরিতে আর আটকে থাকলেন না। টর্নেডো ইনিংসে পূরণ করলেন চলতি আসরের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। চিটাগং বোলারদের নিয়ে মাতলেন ছেলেখেলায়। একের পর এক চার-ছক্কায় মাত্র ৪৭ বলে শতক পূরণ করে গড়লেন বিপিএল ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। ক্রিস গেইলের ৪৪ বলে সেঞ্চুরির রেকর্ডটা তাতে থাকলো অক্ষুন্ন।

সেঞ্চুরি করার পরের বলেই আউট হওয়া হেলস ৪৮ বলে করে যান ১০০ রান। সিকান্দার রাজার বলে বদলি ফিল্ডার নাহিদুজ্জামানের হাতে ধরা পড়ার আগে ইংলিশ ওপেনার দুর্দান্ত ইনিংসটি সাজান ১১ চার ও ৫ ছক্কায়। আউট হওয়ার আগে রোসোর সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে হেলস যোগ করেন ১৭৪ রান।

বিপিএলে ফর্মের তুঙ্গে থাকা রোসোর দিকে আসা যাক এবার। শুরুটা ধীরগতিতে হলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে আক্রণাত্মক হয়ে ওঠেন তিনি। ৫১ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করে অপরাজিত থাকেন তিনি। হার না মানা ১০০ রান করার পথে ৮ চারের সঙ্গে মেরেছেন ৬ ছক্কা।

হেলস-রোসোর দাপটের দিনে সবচেয়ে বেশি রান হজম করতে হয়েছে খালেদ আহমেদকে। চিটাগংয়ের এই পেসার ৩ ওভারে পূরণ করেছেন ‘ফিফটি’ (৫০)! ব্যর্থতার ভিড়ে যা একটু ‍সাফল্য পেয়েছেন আবু জায়েদ, ৩৫ রান খরচায় তার শিকার ২ উইকেট।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.