নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, দেশে জিডিপি’র হার ৭-৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশে নিয়ে যেতে বেসরকারিভাবে বিনিয়োগের হার আরও বাড়াতে এই সরকার কাজ করছে। বিদ্যুৎখাতের সফলতার কারণে দেশের সব অর্থনৈতিক শাখা আজ শক্তিশালী।
আজ (৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে শিল্প ও বণিক সমিতি (এফবিসিসিআই) আয়োজিত বিদ্যুৎ উৎপাদনে অভাবনীয় সাফল্য: গতিশীল প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিদ্যুতের সর্বোত্তম ব্যবহার শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
এফবিসিসিআই এর সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, পিডিবি’র চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ, আরইবি‘র চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন (অব.) ও স্রেডোর চেয়ারম্যান মো. হেলাল উদ্দিন বক্তব্য রাখেন।
সালমান এফ রহমান বলেন, গত দশ বছরে আমাদের অর্জন অবিশ্বাস্য। এর মূলে রয়েছে বিদ্যুৎ। এ সাফল্য ধরে রাখতে হবে। মাইন্ড সেট পরিবর্তন করে ডাবল ডিজিটের প্রবৃদ্ধির হার অর্জন করার যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছে তা সম্মিলিত ও সমষ্টিগতভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
বিদ্যুতের বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন বেশি হলে শিল্পখাত বিকশিত হবে। নতুন নতুন উদ্যোগ নেওয়া যাবে।
সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন দ্বিগুণ হওয়ার পরও দুর্নীতি করার প্রবণতা দুঃখজনক উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, দেশের উন্নয়ন দুর্নীতির কারণে বিঘ্নিত হয়। প্রধানমন্ত্রী এ কারণে দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেছেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে বিনিয়োগের সিংহভাগ বেসরকারি খাত থেকে আসবে। ২০৪১ সাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ খাতে ৭০ বিলিয়ন ডলার ও জ্বালানি খাতে ৪০ বিলিয়ন ডলার লাগবে। পরিবর্তিত অবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে আগামীর উন্নত বাংলাদেশ গড়তে সরকারের পাশাপাশি বিকল্প উৎস হতে অর্থায়ন করা হচ্ছে। সরকারের প্রতি বহির্বিশ্বের আস্থা বাড়ছে–এটা ধরে রেখে আস্থা আরও বাড়াতে হবে। এসময় দেশকে ব্যান্ডিং করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নেট মিটারিং পদ্ধতি জনপ্রিয় করতে পারলে ব্যবহারকারীই লাভবান হবেন। সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) বাস্তবায়িত হলে বছরে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ঢাকায় তেল পরিবহনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটা বাস্তবায়িত হলে সময় ও অর্থ উভয়ই সাশ্রয় হবে।
প্রতিমন্ত্রী এসময় বলেন, বৈশ্বিক অবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের গুরুত্ব উত্তরোত্তর বাড়ছে। বিনিয়োগের যে আস্থা তৈরি হয়েছে ব্যবসায়ীদের উচিত তা গতিশীল করা।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরিকল্পিত এলাকায় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়া হলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বিদ্যুৎ খাতে অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ ও সম্ভাবনা নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ ছিল ৬১তম অর্থনীতির দেশ, ২০১৮ তে তা এগিয়ে হয়েছে ৪২তম অর্থনীতির দেশ এবং ২০৪১ সালে তা হবে ২৩তম অর্থনীতির দেশ। এটার জন্য প্রয়োজন প্রতিবছর ৯ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ। অবশ্য যেভাবে দেশ এগুচ্ছে তাতে ২০৪১ সালের আগেই এটা অর্জন করা সম্ভব হবে।
Be the first to comment