পারমাণবিক শক্তি নিয়ে অগ্রগতি উপস্থাপন বাংলাদেশের

নিউজ ডেস্ক:
পারমাণবিক শক্তি নিয়ে অগ্রগতি উপস্থাপন করেছে বাংলাদেশ। পারমাণবিক শক্তি স্থাপনা উন্নয়নের সাময়িক সমস্যা নিয়ে এক প্রায়োগিক বৈঠকে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) ৪০টি সদস্যদেশের শতাধিক প্রতিনিধির সামনে নিজেদের অগ্রগতি তুলে ধরে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে ভিয়েনায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

আইএইএ তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে একথা বলেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৬ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ। আগামী দশকের মধ্যভাগের আগে বিদ্যুত উৎপাদনে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করে ৯ শতাংশ বিদ্যুত উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে দেশটি। ওই সময়ের মধ্যে দেশের দু’টি পারমাণবিক প্রকল্পই সক্রিয় হওয়ার কথা রয়েছে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের প্রজেক্ট পরিচালক ও নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শওকত আকবর ভিয়েনায় বৈঠকে বাংলাদেশের অগ্রগতি উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, আমাদের ধারণা ২০৪০ সালের মধ্যে চাহিদা বেশি থাকলে বাংলাদেশের ৭৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের প্রয়োজন হবে। আর চাহিদা কম থাকলে ৬৯ হাজার মেগাওয়াট। এক্ষেত্রে পারমাণবিক শক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

আকবর বলেন, ‘২০১৬ সালে অনুমোদিত পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান ফর বাংলাদেশের সংশোধিত রূপ অনুসারে এই হিসাব বের হয়েছে। আমরা নিশ্চিত যে, ২০২৩ সালের মধ্যেই আমরা প্রথম ইউনিটের অনুমোদন পাবো ও ২০২৪ সালের মধ্যে দ্বিতীয়টি।’ রাজধানী থেকে ১৬০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত রূপপুরে নির্মাণাধীন প্রকল্পটির ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (বায়েরা) চেয়ারম্যান নাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘প্রকল্পটির লাইসেন্স পাওয়ার আগে বন্যা ও ভূমিকম্প থেকে সকল ধরনের সুরক্ষাসহ সবদিক বিবেচনা করতে হয়েছে।’
আইএইএ জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশকে নিরাপত্তা, নিয়ন্ত্রণ ফ্রেমওয়ার্ক, ব্যবস্থাপনা, মানব সম্পদ উন্নয়ন, সুরক্ষা ও জরুরী পরিকল্পনার কত বিভাগগুলোতে সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে। গতমাসে ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশী কর্মকর্তা ও অংশীদাররা রূপপুর প্রকল্পটির উন্নতি পর্যালোচনা ও ২০১৯-২০২১ সালে সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনায় সম্মত হয়েছে।

২০১১ সালের নবেম্বর আইইএ বাংলাদেশের ওপর একটি ‘ইন্টেগ্রেটেড নিউক্লিয়ার ইনফ্রাস্ট্রাকচার রিভিউ’ (আইএনআইআর) পরিচালনা করে। পরিচালনা শেষে কিভাবে পারমাণবিক স্থাপনা নির্মাণ করা যায় সে বিষয়ে সুপারিশ করে। এর প্রায় পাঁচ বছর পরে ২০১৬ সালের মে মাসে দ্বিতীয় একটি অভিযানে বিশেষজ্ঞরা প্রকল্পটি নির্মাণের উন্নতি নিয়ে একটি অভিযান পরিচালনা করে।

আইএইএ’র পারমাণবিক প্রকৌশলী জন হাদ্দাদ বলেন, আমাদের সহায়তা স্বল্প কিন্তু কৌশলগত। আমরা বৈজ্ঞানিক পরিদর্শন, ফেলোশিপ ও প্রশিক্ষণ কোর্সের মাধ্যমে সক্ষমতা নির্মাণে সহায়তা প্রদান করি। আমরা দিক নির্দেশনা দেই, নথিপত্র সরবরাহ করি, অভিযান পর্যালোচনা করি, তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার একটি প্লাটফর্ম দেই।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.