মেঘনাঘাট ৫৮৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্রয় চুক্তি সই

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সামিট পাওয়ারের মেঘনাঘাট ৫৮৩ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। আগামী ৩৮ মাসের মধ্যে দ্বৈত জ্বালানির (তেল ও গ্যাস) এ কেন্দ্রটি নির্মাণ করবে সামিট।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বিদ্যুৎ ভবনে এ চুক্তি সই হয়। বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি ছাড়াও বিদ্যুৎকেন্দ্রে জমি ব্যবহারের জন্য পিডিবির সঙ্গে আরেকটি চুক্তি করেছে সামিট। এছাড়া পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) ও তিতাস গ্যাস কোম্পানির সঙ্গে পৃথক চুক্তি করে সামিট।
কেন্দ্রটির ৮০ শতাংশ মালিক সামিট পাওয়ার, বাকি ২০ শতাংশ মালিক যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান জিই (জেনারেল ইলেকট্রিক)। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ঋণ দেবে এইচএসবিসি ও বিশ্বব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইএফসি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক–ই–ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘‘১০ বছর আগে বিশ্বব্যাংক বলেছিল, ‘বাংলাদেশ অন্ধকার দূর করতে বেশি ব্যয় করছে।’তাদের এ মূল্যায়ন আজ ভুল প্রমাণিত হয়েছে। দেশে অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হয়েছে। এটির সুফল দেশের মানুষ এখন পাচ্ছে।’
বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘সর্বশেষ বছরটি বিদ্যুৎ খাতের জন্য খুবই উল্লেখযোগ্য ছিল। এ বছর ৪ হাজার ২৬ মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুৎ যুক্ত হয়েছে গ্রিডে। এরমধ্যে ৫৬ শতাংশ এসেছে বেসরকারি খাত থেকে। বিদ্যুৎ খাতে নতুন নতুন প্রযুক্তি এসেছে, বেসরকারি খাতের মাধ্যমে। তারা শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদন করেনি। তারা আধুনিকায়ন করেছে বিদ্যুৎ খাতের। আমি আশা করবো, উদীয়মান সামিট গ্রুপ দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করবে।’
পিডিবি চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘প্রকল্পের জন্য ২০১৭ সালে এলওআই ইস্যু করা হয়, আজ চুক্তি হলো, অনেক বিলম্ব। তবে দুই পক্ষের বিশেষ করে পিডির লোকজনের দরাদরির কারণে কম দরে চুক্তি হয়েছে।’
আমেরিকান রাষ্ট্রদূত রবার্ট আর মিলার বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা রয়েছে। খুব শিগগিরই মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে।’
সামিট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান বলেন, ‘দেশের মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পেরে ও শেখ হাসিনার ভিশন টোয়েন্টি ওয়ান বাস্তবায়নে সঙ্গে থেকে পেরে সামিট পাওয়ার আনন্দিত। সামিট মাত্র ২৬৮ দিনের মধ্যে ৩শ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জ্বালানি সচিব আবু হেনা মুহাম্মদ রহমাতুল মুনীম, সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের সিঙ্গাপুরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী আয়েশা আজিজ খান।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২২ বছর মেয়াদী এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি গ্যাস, এলএনজি অথবা ডিজেল দিয়ে চালানো হবে। গ্যাসে চালানো হলে প্রতি ইউনিট ২.৯৫ টাকা, এলএনজি হলে ৫.৪৪ টাকা, ডিজেলে ১২.৬০ টাকা দর ধরা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ২০২২ সালে কেন্দ্রটি উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.