বিদ্যুৎ না নিয়েও বিলের মামলায় জেলে মতিন

নিউজ ডেস্ক:

বিদ্যুৎ ব্যবহার না করেও বকেয়া বিল না দেওয়ার অপরাধে জেলহাজতে যেতে হয়েছে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দিনমজুর আবদুল মতিনকে। ছবি : ইউএনবি
বিদ্যুৎ ব্যবহার না করেও বকেয়া বিল না দেওয়ার অপরাধে জেলহাজতে যেতে হয়েছে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দিনমজুর আবদুল মতিনকে। উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের মোচাগড়া গ্রামের এই ব্যক্তিকে থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে আজ বুধবার আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা জেলহাজতে পাঠায়।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, মোচাগড়া গ্রামের দক্ষিণপাড়ার ২৫৬টি পরিবার বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য চার বছর আগে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এ আবেদন করে। আবেদনের পর স্থানীয় বিদ্যুৎ দালাল আবুল কালাম আজাদ ও আবুল বাসার প্রতি গ্রাহকের কাছ থেকে মিটারপ্রতি ১৫ হাজার টাকা আদায় করেন।

ওই সময় মৃত অহিদ আলীর ছেলে আবদুল মতিন মিয়াও আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ সংযোগের অনুমোদন প্রদান করে। কিন্তু মতিন মিয়া দালালচক্রকে চার হাজার টাকা দিলেও বাকি টাকা দিতে পারেননি। ফলে দালালরা বিদ্যুৎ সংযোগের তালিকা থেকে মতিন মিয়ার নাম বাদ দেয়।
দালালরা মতিন মিয়ার আবেদনে একই এলাকার মৃত আবদুস ছামাদের ছেলে সফিকুল ইসলামের ছবি লাগিয়ে দেয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে মতিন মিয়ার মিটারটি ২০১৫ সালের ২২ মার্চ সফিকুল ইসলামকে দিয়ে সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়। ওই মিটার ব্যবহার করা সফিকুল ইসলাম প্রায় ১৭ মাস বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর চান্দিনা অফিসের এজিএম লক্ষ্মণ চন্দ্র পাল বাদী হয়ে বকেয়া বিল চার হাজার সাত টাকা অনাদায়ের জন্য একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় মঙ্গলবার রাতে মুরাদনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কবির হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আবদুল মতিনকে আটক করে বুধবার দুপুরে কুমিল্লা আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়।
এ ব্যাপারে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম মনজুর আলম বলেন, একটি মামলায় মতিন মিয়ার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর কোম্পানীগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার হাবিবুর রহমান আবেদন ফাইলে আবেদন পরিবর্তনের বিষয়টি স্বীকার করেন।
ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বলেন, ‘আবদুল মতিনের নামের মিটার সফিকুল ইসলাম ব্যবহারের বিষয়টি আমাদের জানা নেই। মামলা হওয়ার আগে মতিন মিয়া নোটিশ পেয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আজ এ ঘটনাটি ঘটত না।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.