নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্প্রেডা) চেয়ারম্যান মো. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জ্বালানি ব্যবহারে দক্ষতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে গৃহাস্থলির পাশাপাশি শিল্প কারখানায় টেকসই ও ক্লিন প্রযুক্তি ব্যবহার করা প্রয়োজন।
আজ বুধাবার রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনের অডিটোরিয়ামে দুই দিনব্যাপী ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্লিন টেকনোলজি ফেয়ার’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) মেটাবিল্ড প্রকল্পের আওতায় এ মেলার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআই সহ-সভাপতি ইমরান আহমেদ, পরিচালক খন্দকার রাশেদুল আহসান, এনামুলক হক পাটোয়ারী প্রমুখ।
হেলাল উদ্দিন বলেন, সরকার টেকসই প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করেছে এবং এজন্য উদ্যোক্তাদের সাথে একযোগে কাজ করতে আগ্রহী। শিল্প কারখানায় ব্যবহারের জন্য নতুন নতুন টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনে বিনিয়োগ করার জন্য উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী বলেন, মেটাবিল্ড প্রকল্প বাংলাদেশে প্রায় ২৫০টি মেটাল এবং ইস্পাত কারখানায় টেকসই প্রযুক্তি ব্যবহার এবং জ্বালানি ব্যবহারের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছে। এ ধরনের আয়োজন আমাদের উদ্যোক্তাদেরকে ক্লিন টেকনোলজি ব্যবহারে আরো সচেতন ও আগ্রহী করে তুলবে।
তিনি বলেন, রিসোর্স এফিশিয়েন্ট অ্যান্ড ক্লিন প্রোডাকশন (আরইসিপি) পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইস্পাত ও স্টিল খাত জ্বালানি ও পানি ব্যবহারে যথাক্রমে ২৫ শতাংশ এবং ১৫ শতাংশ সাশ্রয়ী হতে পারে।
টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য সিদ্দিক জোবায়ের এ ধরনের আয়োজনের জন্য ঢাকা চেম্বারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, শিল্পায়নের ধারাকে বেগবান করতে গিয়ে আমারা যে ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করছি, যা অনেক সময় পরিবেশের ক্ষতি করছে। এর ফলে সারা পৃথিবীতে পরিবেশের সুরক্ষা একটি প্রধান প্রতিপাদ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন বাস্তবায়তায় ক্লিন টেকনোলজি বা টেকসই প্রযুক্তি একান্ত আবশ্যক।
তিনি টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য দেশের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আরো বলেন, বাংলাদেশে টেকসই প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য স্প্রেডা ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সাথে একযোগে কাজ করতে আগ্রহী। এ লক্ষ্যে ব্যবসায়ীদের সাথে নিয়ে স্প্রেডা ‘বিজনেস কোয়ালিশন’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম গঠন করতে চায়।
মেটাবিল্ড প্রকল্পের সিনিয়র টেকনিক্যাল এক্সপার্ট রজত ভাট্রা বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের আর্থিক সহায়তায় মেটাবিল্ড প্রকল্প বাংলাদেশে ২৫০টি এবং নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় ৪০টি ইস্পাত শিল্প প্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম চালাচ্ছে। টেকসই প্রযুক্তি ব্যবসা পরিচালনায় ব্যয় হ্রাসের মাধ্যমে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে সফলতা নিয়ে আসে এবং পরিবেশকে সুরক্ষিত রাখে।
বাংলাদেশে অবস্থিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের পোগ্রাম ম্যানেজার ডারিও ট্রমবেটা বলেন, সারা পৃথিবীতেই টেকসই প্রযুক্তি ব্যবহারের জনপ্রিয়তা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিল্প-কারখানায় এ প্রযুক্তি গ্রহণের এখনই উপযুক্ত সময়।
এ সময় তিনি বাংলাদেশি উৎদোক্তাদের আরো বেশি হারে ক্লিন টেকনোলজি ব্যবহারের আহ্বান জানান।
মেলায় প্রায় ৭০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের উদ্ভাবিত পণ্য, প্রযুক্তি এবং ব্যবহারের কার্যপদ্ধতি প্রদর্শন করছে। এ মেলা সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
Be the first to comment