এলএনজির আমদানি কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব

এলএনজি

নিজস্ব প্রতিবেদক:
এলএনজির আমদানি মূল্যের ওপর ১৫ ভাগ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং ২ ভাগ অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে জ্বালানি বিভাগ।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এক চিঠিতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে এ কর প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছেন।
জ্বালানি বিভাগ বলছে, এলএনজির ওপর করারোপ করা হলে পেট্রোবাংলা চাপে পড়বে। সংস্থাটি এমনিতেই এলএনজি সরবরাহ করতে গিয়ে তারল্য-সংকটে রয়েছে।
২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে এলএনজির আমদানি মূল্যের ওপর ১৫ ভাগ ভ্যাট আরোপসহ ২ ভাগ আয়কর বসানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এলএনজি আমদানিতে খরচ বাড়ার পাশাপাশি অর্থ-সংকট তৈরির আশঙ্কা করছে জ্বালানি বিভাগ। এ জন্য কর প্রত্যাহারে চিঠি দিলো তারা।
চিঠিতে মূসক প্রত্যাহারের বিষয়ে বলা হয়, সব খরচ বিবেচনায় আমদানি করা এলএনজির প্রতি ঘনমিটারের মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৩৯ টাকা। প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের গড় বিক্রয় মূল্য ৭ টাকা ১৭ পয়সা। অর্থাৎ প্রতি ঘনমিটারে ঘাটতি ৩১ টাকা ৮৩ পয়সা। দেশের উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ দরকার। এই বিবেচনায় বিষয়টি পূর্ণ বিবেচনা করা প্রয়োজন বলে মনে করে জ্বালানি বিভাগ।
চিঠিতে আয়কর শূন্য করার বিষয়ে বলা হয়, ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানির বিপরীতে ২ ভাগ হারে করের ৯৪১ দশমিক ৭০ কোটি টাকা পরিশোধযোগ্য। পেট্রোবাংলা একটি অমুনাফাভোগী প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এলএনজি আমদানি পর্যায়ে উৎসে কর্তিত আয়কর সমন্বয়ের সুযোগ না থাকায় তারল্য সংকটের মুখে পড়তে হচ্ছে। ফলে এলএনজি আমদানি ব্যয় মেটানোর ক্ষেত্রে উৎসে পরিশোধিত করের সমপরিমাণ অর্থ ঘাটতি দেখা দেবে বলে মনে করছে জ্বালানি বিভাগ।
এছাড়া চিঠিতে গ্যাস উৎপাদনে ব্যবহৃত আমদানি করা মালামালের ওপর প্রস্তাবিত অতিরিক্ত অগ্রিম কর ৫ ভাগ রহিত করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়, এতে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
অন্যদিকে প্রাকৃতিক গ্যাস, গ্যাসীয় অবস্থায় পণ্যে সম্পূরক শুল্ক ১০০ ভাগ করার প্রস্তাব রহিত করারও অনুরোধ জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এলএনজি যখন পাইপ লাইনে যাবে তা প্রাকৃতিক গ্যাস হিসেবেই যাবে, এতে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে। তাই প্রাকৃতিক গ্যাসে সম্পূরক শুল্ক ১০০ ভাগ করার প্রস্তাব রহিত করা প্রয়োজন বলে চিঠিতে বিদ্যুৎ বিভাগ অভিমত দিয়েছে।
সবশেষে চিঠিতে বলা হয়, জনগণের কাছে সহনীয় দামে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এলইডি বাতি, ভিআরএফ প্রযুক্তিসহ ইনভার্টারযুক্ত এসি, ইনভার্টারযুক্ত ফ্রিজের ওপর তুলনামূলক কম হারে ভ্যাট, ট্যাক্স ও আমদানি শুল্ক নির্ধারণ করা যেতে পারে। এছাড়া ভবন নির্মাণে জ্বালানিসাশ্রয়ী ইনসুলেটিং ম্যাটেরিয়াল, লো ইউভি গ্লাসের ওপর শুল্ক কমানো হলে জনগণ এসব পণ্য ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ হবে এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.