বিশেষ প্রতিবেদন:
আবাসিকে গ্যাস সংযোগ স্থগিতের আদেশ জারির ১৯ মাস পর গ্রাহকের ডিমান্ড নোটের টাকা ফেরত দিচ্ছে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে চিঠি দিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। কোন প্রক্রিয়ায় গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে তা আগামী (রবিবার) বা (সোমবার) মধ্যে বিতরণ কোম্পানিগুলো তা জানাবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ১৯ মাস আগে সরকারি আদেশ জারির পরও গ্রাহকের টাকা বিতরণ কোম্পানির অ্যাকাউন্টে থেকে যাওয়াতে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছিল। এতে কেউ কেউ আশা করছিলেন ভবিষ্যতে হয়তো আবার সরকার গ্যাস সংযোগ দিলে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
গত বছরের (২১ মে ২০১৯) আবাসিক, সিএনজি ও বাণিজ্যিকে নতুন করে আর কোনও গ্যাস সংযোগ না দেওয়ার জন্য আদেশ জারি করে সরকার। কিন্তু গ্রাহকেদের কাছ থেকে জমা নেওয়া ডিমান্ড নোটের টাকার কী হবে সে বিষয়ে তখন কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। গত সপ্তাহে জ্বালানি বিভাগ থেকে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জ্বালানি বিভাগের উপ-সচিব আকরামুজ্জামান স্বাক্ষরিত ২০১৯ সালের ২১ মে জারি করা আদেশে বলা হয়, ‘নতুন গ্যাস সংযোগের ক্ষেত্রে শিল্প, বিদ্যুৎ ও সার কারখানাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের সক্ষমতা বাড়া এবং ক্যাপটিভ পাওয়ারে উৎপাদন দক্ষতা কম থাকায় ক্যাপটিভ শ্রেণিতে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া নিরুৎসাহিত করতে হবে। ভবিষ্যতে সিএনজি, গৃহস্থালি ও বাণিজ্যিক শ্রেণিতে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া আগের মতো স্থগিত রাখতে হবে।’
জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, এখনও আগের মতোই স্থগিতই রাখা হচ্ছে। ভবিষ্যতে গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধির সঙ্গে এ বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
এখন দেশের মোট গ্যাস মজুতের পরিমাণ ১০টিসিএফের নিচে নেমে এসেছে। এলএনজি আমদানি করে চাহিদা পূরণ করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সরকার গৃহস্থালির জ্বালানির চাহিদা তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) দিয়ে মেটানোর চিন্তা করছে। এজন্য গ্রাহকদের জন্য এলপিজি ন্যায্য মূল্যে দেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর আওয়ামী লীগ সরকার দেশে গ্যাস সংকটের কথা বলে আবাসিক সংযোগ বন্ধ করে দেয়। এরপর ২০১৩ সালের শেষের দিকে আবার আবাসিক সংযোগ চালু করে। কিন্তু ওই বছর নির্বাচনের পর আবার অলিখিতভাবে জ্বালানি বিভাগ থেকে বিতরণ কোম্পানিকে আবাসিকে নতুন আবেদন নিতে নিষেধ করে দেওয়া হয়। তবে ২০১৯ সালে লিখিত ভাবে আবাসিক সংযোগ স্থগিত রাখার আদেশ জারি করা হয়। এর এখন যাদের কাছ থেকে ডিমান্ড নোটের টাকা জমা নেওয়া হয়েছিল তাদেরও টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
Be the first to comment