ছাদে সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সাশ্রয় সম্ভব: জ্বালানি উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক :

প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী বলেছেন,গার্মেন্টস শিল্প কারখানার ছাদগুলোতে সোলার প্যানেল স্থাপন করা যেতে পারে। এতে বিদ্যুৎ বিলও অনেক সাশ্রয় করা সম্ভব। তিনি বলেন, ‘ এজন্য বিজিএমইএ এবং স্রেডা’র মধ্যে একটি সমঝোতা স্বারকও সই করা যেতে পারে। তবে সবার আগে একটি নীতিমালা করতে হবে। পাশাপাশি আর্থিক বিষয়টিও আলোচনার মধ্যে রাখতে হবে।’

বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের উদ্ভুদ্ধ করতে ‘স্কেলিং আপ নেট মিটারড সোলার সিস্টেম ইন গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি’ শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের প্রতি এ আহ্বান জানান।

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জ্বালানি উপদেষ্টা বিজিএমইএ’র প্রেসিডেন্ট রুবানা হকের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ছাদে সোলার স্থাপন খুবই অল্প টাকার বিষয়। যে বিশাল বিনিয়োগ আপনারা করছেন, তার তুলনায় এটি খুবই অল্প। ধরিত্রির প্রতি দায়িত্ববোধ থেকেই এই কাজ সবাই করবে বলে আমি আশা করি।’ শিল্প মালিকদের প্রতি তিনি এই প্রযুক্তি পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘শুধু গার্মেন্টস নয়, আরও অনেক বড় বড় ভবনের খোলা ছাদ পড়ে আছে। সেগুলো আমরা কাজে লাগাতে পারি। এক্ষেত্রে স্রেডা (টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) তাদের সহযোগিতা করতে পারে। স্রেডা’র উচিত একটি আলাদা সেল করা। যেখানে গ্রাহকরা সব ধরনের সুবিধা পাবেন। তারা কাজের উৎসাহ পাবেন।’

জ্বালানি উপদেষ্টা রুফটপ সোলারের আর্থিক বিষয়ে ইডকলের কাছে যাবার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘ইডকল এই ধরনের প্রজেক্টে ঋণ দেবে, সহযোগিতাও করবে। কারণ, ব্যাংকগুলো সাধারণত ছোট প্রজেক্টে আগ্রহ দেখায় না।’

কর্মশালায় বলা হয়, তৈরি পোশাক কারখানার ছাদে সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল বসিয়ে বিদ্যুৎ বিলের সাশ্রয় করা সম্ভব। এতে বলা হয়, পোশাক কারখানার মালিক চাইলে নিজে বা তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে চুক্তি করে সৌর প্যানেল বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারেন।

আরও বলা হয়, পোশাক কারখানার মালিক নিজেই সৌর প্যানেল বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে প্রতি কিলোওয়াট আওয়ার (ইউনিট) বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ পড়বে তিন টাকা ১০ পয়সা। অপরদিকে ঋণ নিয়ে সৌর প্যানেল বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে খরচ পড়বে তিন টাকা ৬০ পয়সা। আর তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করেও সাড়ে সাত টাকায় বিদ্যুৎ পেতে পারেন। যেখানে গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ কিনলে ইউনিট প্রতি দর পড়বে আট টাকা ৫৩ পয়সা।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘গ্রিন এনার্জির ক্ষেত্রে রূফটপ একটি বড় সমাধান। সবাই মিলে কাজ করতে হবে। শিল্প কারখানার মালিকদের এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। স্রেডাকে এ ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে আশা করছি।’

বিদ্যুৎ সচিব বলেন, ‘নেট মিটারিং সিস্টেম ব্যবহার করে শিল্প মালিকরা যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেন, তেমনই দাতাসংস্থাগুলোর কাছ থেকে বিশেষ সুবিধাও পেতে পারেন।’ তিনি বলেন, ‘গার্মেন্টস মালিকদের নেট মিটারিং ব্যবহারের ক্ষেত্রে ইডকল ইতোমধ্যে সহযোগিতা করছে।’ ইডকলেরর বোর্ড মেম্বার হিসেবে গার্মেন্টসকে যাতে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়, সে ব্যপারে নিশ্চয়তা দেন বিদ্যুৎ সচিব।

শিল্প মালিকদের পক্ষে বিজিএমইএ’র প্রেসিডেন্ট রুবানা হক বলেন, ‘আমরা গ্রিন ইন্ডাস্ট্রি স্থাপন করেছি। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের গ্রিন ইন্ডাস্ট্রির সংখ্যা বাড়ছে। সবুজ কারখানা স্থাপনের ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি আমাদের এই কাজকে আরও সহজ করবে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আরও এগিয়ে যাবো।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.