বিশেষ প্রতিবেদন:
গেল এক সপ্তাহে দেশে অন্তত ৫টি সিলিন্ডার বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাত জন নিহত হয়েছেন আহত হয়েছেন শতাধিক। এভাবে প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও সিলিন্ডার বিষ্ফোরণ ঘটলেও ঘটনার কোন প্রতিকার হয় না। কখনও গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার কখনও বা বাসা বাড়ি অথবা কারখানার সিলিন্ডার আবার আবার কখনও বা বেলুন ফোলানোর গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ঝলসে যাচ্ছে প্রাণ। কিন্তু সঠিক নিয়োম মানলে কোথাও বিষ্ফোরণ ঘটার কথা নয়।
ঘটনা-১ গত ২২ জানুয়ারি কক্সবাজারের মহেশখালীতে বেলুন ফোলানোর গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে বেলুন বিক্রেতাসহ তিনজন প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত আটজন। উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকার স্থানীয় শাহ মজিদিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন মাতারবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শুক্রবার বেলা ১১টায় এ ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ উল্লাহ জানান। নিহতরা হলেন মাতারবাড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণ মিয়াজী পাড়ার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মোহাম্মদ এহছান (১২), সিকদার পাড়ার ফরিদুল আলমের ছেলে এবং সাদেকুল ইসলাম রাহাত (১৩) এবং বেলুন বিক্রেতা মোহাম্মদ আলমগীর (৪২)।
ঘটনা-২, ২২ জানুয়ারি একই দিন বান্দরবানে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মাইক্রোবাসে আগুন, ৬ পর্যটক আহত হয়েছেন। বান্দরবান জেলা শহরের বাসস্টেশন এলাকায় ট্রাক-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে মাইক্রোবাসে আগুন লেগেছে। এ ঘটনায় অন্তত ছয় পর্যটক আহত হয়েছে। ওই দিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- আনোয়ার, সামিয়া, নিয়াজ, মেহেদী, মাসুদ ও ওমর ফারুক।
ঘটনা-৩, ২২ জানুয়ারি বরগুনায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত ১, আহত শতাধিক। বরগুনার পাথরঘাটায় বরফমিলের অ্যামোনিয়া গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে একজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া বিষাক্ত গ্যাসে ফায়ার সার্ভিসের দুই কর্মীসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণের পর অ্যামোনিয়া গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়।
ঘটনা-৪, ১৬ জানুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় প্রাইভেটকারের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে সাতজন দগ্ধ হয়েছে। তাদের কাউকে কাউকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করতে হয়েছে।
বিষ্ফোরক পরিদপ্তর সূত্র বলছে নিয়োম মানলে কোন সিলিন্ডার বিষ্ফোরণ ঘটার কথা নয়। প্রত্যেকটি সিলিন্ডারের একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ রয়েছে। এই মেয়াদ পেরিয়েগেলে সিলিন্ডার ব্যবহার করা উচিত নয়। কিন্তু দেশে এই নিয়োম মানার প্রবণতা সবার মধ্যে নেই। এতে করে সিলিন্ডার বিষ্ফোরণ ঘটছে এতে মানুষের মৃত্যু এবং আহত হওয়ার ঘটনা বাড়ছে।
সিলিনন্ডার বিষ্ফোরণের পর বিষ্ফোরক পরিদপ্তর একটি তদন্ত করে। কিন্তু সেই তদন্তে কি হয় তা কেউ কোন দিন জানে না। লোক দেখানো এক তদন্ত কমিটি করা ছাড়া বিষ্ফোরক পরিদপ্তর সিলিন্ডার বিষ্ফোরণ প্রতিরোধে কোন দিনই কিছু করে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিষ্ফোরক পরিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, সীমিত সাধ্যের মধ্যে আমাদের এর বেশি কিছু করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তিনি জেলা প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে একীভূত করে কাজ করার উপর জোর দেন।
Be the first to comment