বিশেষ প্রতিবেদনে :
পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত রাশিয়া, বেলারুশ ও ইউক্রেনের নাগরিকদের প্রয়োগের জন্য এক হাজার ডোজ করোনার ‘স্পুটনিক ভ্যাকসিন’ (রাশিয়ায় উদ্ভাবিত ও প্রস্তুতকৃত) আমদানির অনুমতি দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। শিগগিরই এই ভ্যাকসিনের চালান দেশে আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে বাংলাদেশে এই ভ্যাকসিন আমদানির অনাপত্তি দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ব নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
রাশিয়ান স্টেট অ্যাটোমিক এনার্জি করপোরেশন রোসাটম এবং রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প অফিসকে তিন শর্তে এই অনাপত্তি পত্র দিয়েছে সরকার।
এর প্রথম শর্তে বলা হয়েছে, ‘আমদানি করা এই ভ্যাকসিনটি শুধুমাত্র রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রজেক্টে কর্মরত রাশিয়ান স্টেট অ্যাটোমিক এনার্জি করপোরেশনের রাশিয়া, বেলারুশ ও ইউক্রেনের নাগরিকদের ওপর প্রয়োগ করতে হবে।’
দ্বিতীয় শর্ত মাফিক, ‘ইস্যুকৃত এ এনওসি ইস্যুর তারিখ থেকে ছয় মাস পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।’
তৃতীয়ত, ‘এই ভ্যাকসিনটি ব্যবহারে কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। রোসাটমকে এর সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিতে হবে।’
দেশের প্রথম পারমাণবিক এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে, রূপপুর প্রকল্পে ২৫ হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছেন। যার মধ্যে পাঁচ হাজারের বেশি নাগরিক রাশিয়া, ইউক্রেন ও বেলারুশের।
প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে, দুটি পারমাণবিক ইউনিটে এখান থেকে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে করোনা মহামারির মধ্যেও পাবনায় কাজ চলছে পুরোদমে।
রাশিয়ার প্রত্যক্ষ আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় নির্মাণাধীন এই প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে, করোনার শুরু থেকে এখানে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হয়েছে। শ্রমিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিতভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে সংক্রমণ সতর্কতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, এক হাজার ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর পর্যায়ক্রমে এই প্রকল্পে কর্মরত সব বিদেশির করোনার টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া, প্রকল্পের বাস্তবায়ন ও উৎপাদন পর্যায়ে যেসব জনবল প্রস্তুত রাখতে হবে, তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের জন্য বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় নবীন কর্মকর্তাদের নিয়মিত পাঠানো হচ্ছে। পাশাপাশি, প্রকল্পের কাজে রাশিয়া থেকে পাবনার প্রকল্প এলাকায় আসা কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীদের সরকারি নির্দেশনা মেনে কোয়ারেন্টিন এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, প্রথম ইউনিটের পারমানবিক চুল্লী নির্মাণের মূল যন্ত্রাংশ রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল ও স্টিম জেনারেটসহ গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি এখন প্রকল্প এলাকায়। সমানতালে চলছে দ্বিতীয় ইউনিটের নির্মাণ কাজও। আশা করা হচ্ছে, নির্দিষ্ট সময়মতোই দেশের প্রথম ও গৌরবের এই প্রকল্প বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হবে।
Be the first to comment