সাশ্রয়ের জন্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক :

‘বাংলাদেশে কয়লা বিদ্যুতের ভবিষ্যত’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা
‘বাংলাদেশে কয়লা বিদ্যুতের ভবিষ্যত’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা
উচ্চ আয়ের দেশের কাতারে যাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতার সক্ষমতা ধরে রাখার কোনও বিকল্প নেই। আর এটা নিশ্চিত করার জন্য সাশ্রয়ী জ্বালানি সরবরাহ পাওয়া খুবই জরুরি। কেবলমাত্র দেশি ও আমদানি করা কয়লা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমেই আগামী চার দশক পর্যন্ত সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব। এজন্য নিজস্ব বিনিয়োগের মাধ্যমে কয়লা উত্তোলন ও কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

রবিবার (১১ এপ্রিল) এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিন আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা এই মতামত তুলে ধরেন।

‘বাংলাদেশে কয়লা বিদ্যুতের ভবিষ্যত’ শীর্ষক এই আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের প্রেসিডেন্সির স্পেশাল এনভয় আবুল কামাল আজাদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান মনসুর। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ আবদুস সালেক। আলোচনায় অংশ নেন বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভলপমেন্টের চেয়ারপারসন আবুল কাসেম খান, সাবেক বিদ্যুৎ সচিব ড. সুলতান আহমেদ, বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নুরুল আলম, বিপিডিবির চেয়ারম্যান ইঞ্জিয়ার বেলায়েত হোসেন, অস্ট্রেলিয়ার আরএমআইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ফিরোজ আলম ও খনি প্রকৌশলী ড. মুশফিকুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেন।

আবুল কামাল আজাদ বলেন, ‘সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য একটি যথাযথ জ্বালানি মিশ্রণ খুব জরুরি। এতে কয়লাকে বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। কারিগরি এবং অর্থনৈতিকভাবে নিজস্ব কয়লা উন্মুক্ত পদ্ধতিতে আহরণ যথাযথ হলে বিশেষজ্ঞরা তা রাজনীতিবিদদের কাছে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং কয়লার জন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ না পেলে এটার জন্য নিজস্ব অর্থায়ন করতে হবে। আর এই সক্ষমতা বাংলাদেশের আছে।’

ড. আহসান মনসুর বলেন, ‘কয়লা বিদ্যুৎ থেকে একেবারে সরে আসার সুযোগ নেই। অর্থনীতির প্রতিযোগিতার সক্ষমতা ধরে রাখার জন্য নিজস্ব কয়লা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। অনেক সময় নষ্ট হয়েছে আর নয়। কয়লা ব্যবহারে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নইলে তা আর কখনও ব্যবহার করার সুযোগ থাকবে না।’

আবুল কাসেম খান বলেন, ‘জাতীয় স্বার্থেই নিজস্ব কয়লা উত্তোলন ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আর সেটার জন্য প্রয়োজনে স্থানীয়দের পুনর্বাসন করতে হবে। কেননা, কেবল কয়লা ও কয়লা বিদ্যুৎ পারে আগামী ৫০ বছর পর্যন্ত জ্বালানি নিরাপত্তা এবং সহনীয় দামে বিদ্যুৎ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে।’

ড. সুলতান আহমেদ বলেন, ‘কয়লার বিরুদ্ধে আমাদের সবচেয়ে বড় যুক্তি হচ্ছে আমরা দূষণ করছি খুব সামান্য। তারপরও দূষণ কমাতে আমরা বিনিয়োগ করছি। ফলে আমাদের সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ পাওয়ার জন্য বৈশ্বিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে।’

বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘জ্বালানি খরচের বিবেচনায় কয়লা এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে সাশ্রয়ী। অর্থায়ন ও প্রযুক্তি পাওয়া আগামী দিনে চ্যালেঞ্জ হবে তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু বৈশ্বিক কয়লা ব্যবহার কমে আসার কারণে আগামী তিন-চার দশক কয়লার দাম স্থিতিশীল থাকবে। এমনকি তা কমেও আসতে পারে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.