নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম বলেছেন, ভবনে জ্বালানির দক্ষ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য পাইলট প্রকল্প করার বিষয়টি খুব জরুরি। সরকার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ভবন তৈরিতে পূর্ণ সহায়তা করবে। টাকা তেমন কোনো সমস্যা হবে না। সেইসঙ্গে বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে। তারাও যেন এমন ভবন তৈরিতে এগিয়ে আসে। সেখানেও সরকারি সবরকমের সহযোগিতা থাকবে।
আজ রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর ) এনার্জি এন্ড পাওয়ার ম্যাগাজিন আয়োজিত “এনার্জি এফিসিয়েন্সি ইন পাবলিক বিল্ডিংস” শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্রেডা ও জিআইজেড এর সহায়তায় আলোচনায় মোল্লাহ আমজাদ হোসেন সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসাবে ছিলেন অতিরিক্ত সচিব এবং সাসটেনেবল এন্ড রিনিয়েবল এনার্জি ডেভলপমেন্ট অথরিটির (স্রেডা) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলাউদ্দিন এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জনাব মো. সাইফুল্লাহিল আজম। আলোচ্য বিষয়ের উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেড্রার সদস্য (এনার্জি এফিসিয়েন্সি এন্ড কনজারভেশন) ফারজানা মমতাজ। প্যানেলিস্ট হিসাবে কথা বলেছেন, বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. জহরুল হক এবং গণপূর্ত বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল হক।
উপদেষ্টা বলেন, জ্বালানি সাশ্রয় নিয়ে কারিগরি বিষয়ে সমাধান ধাপে ধাপে করতে হবে। ব্যক্তিগত অভ্যাস দিয়ে ৫০ ভাগ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হওয়া সম্ভব। জ্বালানি সাশ্রয়ী ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে একটা পাইলট প্রজেক্ট করা যেতে পারে। সরকার এর ব্যয় পুরোটা বহন করবে। এ ছাড়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিদ্যুৎ সুইচ বন্ধ হয়ে যায় এমন প্রযুক্তি ব্যবহার বাড়াতে হবে। এসির তাপমাত্রা যেন ২৮ ডিগ্রির কম না করা যায় এমন স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
মূল প্রবন্ধে ফারজানা মমতাজ বলেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ভবন নিয়ে স্রেডা একটা নিরীক্ষা কার্যক্রম শেষ করেছে। সরকার ২০২১ সালে ১৫ ভাগ আর ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ ভাগ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনা করেছে। শুধুমাত্র আবাসিক খাত বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী করা গেলে প্রায় ২৯ ভাগ জ্বালানি সাশ্রয় করা সম্ভব।
প্রবন্ধে বলা হয়, গণপূর্ত, শিক্ষা বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগ মিলিয়ে দেশে প্রায় ৮৫ হাজার সরকারি ভবন আছে। এরমধ্যে গণপূর্তের ১৪ হাজার, যার ২৭৩টি টাকায়। ৮০ কোটি থেকে ১২০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে এই ভবনগুলো থেকে বছরে ১১ থেকে ১৫ মিলিয়ন ঘণ্টা বিদ্যুৎ/বার্ষিক সাশ্রয় করা সম্ভব। এতে বছরে ১১ কোটি থেকে ১৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। নিয়ন্ত্রণ করা যাবে কার্বন দূষণ।
সভায় যেসব সুপারিশ উপস্থাপন করা হয় সেগুলো হলো, কম্পিউটার ব্যবহারে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী মোড ব্যবহার করতে হবে। ফ্লুরোসেন্ট টিউব লাইটের বদলে এলইডি বাল্ব ব্যবহার করতে হবে। সনাতন পদ্ধতির সিলিং ফ্যান ব্যবহার না করে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ফ্যান ব্যবহার করতে হবেপুরোনো এসির বদলে ইনভার্টার প্রযুক্তি সহ এসি ব্যবহার করতে হবে। ভবনগুলোতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী কাচ ব্যবহার করতে হবে। বিদ্যুৎ ব্যবহারে গতানুগতিক অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। এছাড়া একটা সমন্বিত বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী গাইড লাইন তৈরি করতে হবে।
মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ভবনগুলোকে জ্বালানি দক্ষ করা একটি বড় কাজ। প্রাথমিক পর্যায়ে পাবলিক বিল্ডিংকে জ্বালানি দক্ষ করার উদ্যোগ হিসাবে ১২টি ভবনে সমীক্ষা করা হয়েছে। এর আলোকে কাজ চলছে, প্রয়োজনে সমীক্ষা আরো করা হবে।
Be the first to comment