আহমেদ রক্তন:
স্পট মার্কেট থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কেনায় সরকারের ২৫০ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে। এরপরও দেশের শিল্পের চাকা সচল রাখার জন্য জরুরি ভিত্তিতে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কিনেছে বলে জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে।
জ্বালানি সচিব আনিছুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, স্পট মার্কেটের অতিরিক্ত এলএনজির দামের বিষয়টি আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করেছি। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার সময় শিল্প কারখানা যাতে বন্ধ না থাকে সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। এজন্যই আমরা স্পট মার্কেট থেকে অতিরিক্ত দামে এলএনজি এনে দেশে শিল্পের চাকা সচল রেখেছি।
এশিয়ার মধ্যে চীন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কবলে পড়েছে। বিশ্বজুড়ে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়াতে চীন শিল্পে বিদ্যুৎ রেশনিং করছে। রাস্তার বাতিও বন্ধ রেখেছে। গত সপ্তাহের আলোচিত খবর ছিল ইংল্যান্ডে জ্বালানি তেলের সংকট। বিশ্বেজুড়ে জ্বালানির দাম বৃদ্ধিতে রাষ্ট্রগুলো সংকটে পড়েছে। কোভিড-১৯ পেরিয়ে বিশ্ব অর্থনীতি চাঙ্গাভাব ফিরে আসার কারণে জ্বালানির দাম বেড়েছে।
রূপান্তিরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি (আরপিজিসিএল) এর সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমি হিসেব করে দেখেছি আমরা স্পট মার্কেট থেকে অতিরিক্ত দামে তিন কার্গো এলএনজি ক্রয় করছি। এখানে সরকারের ব্যয় হয়েছে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদি চুক্তির আওতায় এই এলএনজি আনা হলে সর্বোচ্চ ১০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হতো। সঙ্গত কারণে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনাতে সরকারের অতিরিক্ত ২৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে।
স্পট মার্কেটে চাহিদার উপর ভিত্তিতে এলএনজির দাম নির্ধারিত হয়। অন্যদিকে দীর্ঘ মেয়াদি চুক্তিতে ক্রড অয়েল (অপরিশোধিত তেল) এর দামের সঙ্গে হিটিং ভ্যালু যোগ করে এলএনজির দাম নির্ধারণ করা হয়। এখন স্পট মার্কেটে প্রতি এমএমবিটিইউ (ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট) এলএনজি ৩২ থেকে ৩৬ ডলারে কিনতে হচ্ছে।
দেশে দুটি এলএনজি টার্মিণাল বছরে ৭ মিলিয়ন টন এলএনজিকে রিগ্যাসিফিকেশন (প্রক্রিয়াকরণ) করতে পারে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদি চুক্তিতে কাতার এবং ওমানের সঙ্গে চার মিলিয়ন টন এলএনজির সংস্থান রয়েছে। বাকি এলএনজি স্পট মার্কেট থেকে কিনে আনতে হয়। বাংলাদেশ সিঙ্গাপুরের স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি করে থাকে।
Be the first to comment