আন্তর্জাতিক বাজারে কমলে তেলের দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি

জ্বালানি তেল

নিউজ ডেস্ক:
চলতি অর্থ বছরের শুরু থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেতে থাকায় সর্বাধিক ব্যবহৃত ডিজেল এর ক্ষেত্রে বিপিসি লোকসানের সম্মুখীন হয়। বিপিসি লোকসানে চলে গেলে বিপিসির উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্থ হবে যা জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য হুমকির সম্মুখীন হতে পারে। সার্বিক প্রেক্ষাপটে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম সমন্বয় করেছে সরকার। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে আবারো দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জ্বালানি বিভাগ।

আজ শুক্রবার (৫ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে এই ব্যাখ্যা দিয়েছে।

আজ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তির ব্যাখ্যায় বলা হয়, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য ঊর্ধ্ব গতির কারণে পার্শ্ববর্তি দেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ জ্বালানি তেলের মূল্য নিয়মিত সমন্বয় করছে। কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সবসময় জনগণের ক্রয় ক্ষমতা বিবেচনায় রেখে সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি তেল ভোক্তা পর্যায়ে সরবরাহ করতে বদ্ধপরিকর।

সরকার জানুয়ারি ২০১৩ সময়ে দেশে ডিজেল এর মূল্য লিটার প্রতি ৬৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল। পরবর্তীতে এপ্রিল ২০১৬ সময়ে ডিজেল এর মূল্য লিটার প্রতি ৩ টাকা কমিয়ে ৬৫ টাকায় নির্ধারণ করেছিল। বিগত সাড়ে পাঁচ বছরে দেশে ডিজেল বা কেরোসিন এর মূল্য অপরিবর্তিত ছিল এবং ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) দশ হাজার কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে।

চলতি অর্থ বছরের শুরু থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেতে থাকায় সর্বাধিক ব্যবহৃত ডিজেল এর ক্ষেত্রে বিপিসি লোকসানের সম্মুখীন হয়। চলতি বছরের জুনে ডিজেলে লিটার প্রতি ২ টাকা ৯৭ পয়সা, জুলাই মাসে ৩ টাকা ৭০ পয়সা, আগস্ট মাসে ১ টাকা ৫৮ পয়সা, সেপ্টেম্বর মাসে ৫ টাকা ৬২ পয়সা এবং অক্টোবর মাসে ১৩ টাকা ০১ পয়সা করে বিপিসির লোকসান হয়। সে হিসেবে গত সাড়ে পাঁচ মাসে সর্বাধিক ব্যবহৃত ডিজেলের ক্ষেত্রে বিপিসি’র মোট লোকসানের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১ হাজার ১৪৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। যা সরকার কর্তৃক ভূর্তকি দিয়ে সমন্বয় করতে হবে। তাছাড়া জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে প্রায় ৩৩ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) গ্রহণ করেছে। এ অবস্থায় বিপিসি লোকসানে চলে গেলে এসব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্থ হবে যা জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য হুমকির সম্মুখীন হতে পারে।
সার্বিক প্রেক্ষাপটে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে সরকার ৪ নভেম্বর দেশে ডিজেল ও কেরোসিন এর মূল্য পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে, যদিও আশেপাশের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডিজেলের মূল্য এখনও কম।গত ৩ নভেম্বর ভারতের কোলকাতায় ডিজেলের মূল্য ছিল ১০১.৫৩ রুপি/লিটার বা ১২৪.৩৭ টাকা তেলের ভেজালরোধে কেরোসিনের মূল্য ডিজেল এর সমান রাখা হয়।

আন্তজার্তিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস পেলে সরকার পুনরায় ডিজেল ও কেরোসিন এর মূল্য সমন্বয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

প্রসঙ্গত, গত ৩ নভেম্বর বুধবার রাতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি ১৫ টাকা বাড়ানো হয়। ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়৷ যা ৪ নভেম্বর থেকেই কার্কযর করা হয়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*


This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.