মফস্বল প্রতিবেদন:
বিস্ফোরকদ্রব্য সংকটের কারণে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (এমজিএমসিএল) পাথর উত্তোলন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার ভোর ৬টা থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সময়মতো বিস্ফোরকদ্রব্য আমদানি করা সম্ভব হয়নি। ফলে বিস্ফোরকদ্রব্যের সংকট দেখা দেয়। এ অবস্থায় আজ শনিবার (১২ মার্চ) সকাল থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ রেখে শ্রমিকদের সাময়িক ছুটিতে পাঠিয়েছে খনির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি)
মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানির একজন কর্মকর্তা বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি ও সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সময়মতো অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট আমদানি করা সম্ভব হয়নি। তবে বিস্ফোরকদ্রব্য আমদানির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই বিস্ফোরকদ্রব্য আমদানি করা সম্ভব হবে। এরপর পাথর উত্তোলনের কাজ শুরু হবে।
জানা যায়, দেশের একমাত্র পাথর খনি মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করে ২০০৭ সালের ২৫ মে। প্রথম অবস্থায় খনি থেকে দৈনিক এক হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টন পাথর উত্তোলন হলেও পরে তা নেমে আসে ৫০০ টনে। উৎপাদনে যাওয়ার পর থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত লোকসানের পরিমাণ দাঁড়ায় শতকোটি টাকার ওপরে।
এ অবস্থায় উৎপাদন বাড়াতে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৯২ লাখ মেট্রিক টন পাথর উত্তোলনের বিপরীতে ১৭১.৮৬ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করে খনির উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয় বেলারুশের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়ামকে। বর্তমানে তিন শিফটে পাথর উত্তোলন করছেন প্রায় সাড়ে সাতশ শ্রমিক। এছাড়া দেশি-বিদেশি মিলে রয়েছে প্রায় ২০০ কর্মকর্তা রয়েছেন। প্রতিদিন তিন শিফটে পাথর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পাঁচ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। অবশ্য কখনও কখনও লক্ষ্যমাত্রারও বেশিও উত্তোলন করা হয়। লাভের মুখ দেখায় পাথর উত্তোলনের জন্য ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে আগামী ছয় বছরের চুক্তি করে মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিদিন গড়ে সাড়ে পাঁচ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
Be the first to comment