নিজস্ব প্রতিবেদক :
জ্বালানি তেল বিক্রির ৭ শতাংশ কমিশনসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে কর্মবিরতির কর্মসূচি পিছিয়ে সরকারকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটরস, এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। এর মধ্যে দাবি পূরণ না হলে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঢাকাসহ সারা দেশে পেট্রল পাম্প বন্ধ রেখে ‘প্রতীকী কর্মবিরতি’র ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
এর আগে সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ নাজমুল হক ঘোষণা দেন, দাবি পূরণ না হলে ৩১ আগস্ট থেকে প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করবেন তারা। তবে গত রবিবার বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সঙ্গে বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত বদলানো হয়েছে বলে জানান তিনি। আজ সোমবার বিপিসির ঢাকার লিয়াজোঁ অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নাজমুল হক।
সংবাদ সম্মেলনে বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ বলেন, ‘তাদের দাবিগুলোর বিষয়ে আন্ত মন্ত্রণালয় বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা তাদের বলেছি, আপনারা কিছু দিন সময় দেন। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আপনারা একটু অপেক্ষা করেন।’
নাজমুল হক বলেন, ‘রবিবার বিপিসির সঙ্গে বৈঠকের পর আমাদেরও মনে হয়েছে, এই বিষয়গুলোতে একাধিক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। সিদ্ধান্ত নিতে আন্ত মন্ত্রণালয় বৈঠক করা প্রয়োজন। তাই আমরা ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করছি। এই সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হলে ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি শুরু হবে।’
তাদের দাবিগুলো হলো―
১. জ্বালানি মন্ত্রণালয়, বিপিসি ও অ্যাসোসিয়েশন নেতাদের মাঝে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তেল বিক্রির কমিশন তেলের মূল্যের ওপর শতকরা হার বা পার্সেন্টেজ ভিত্তিতে করতে হবে।
২. তেলের পরিমাপে কারচুপি রোধে নিয়মিত মনিটরিং বা অভিযান পরিচালনা করতে হবে এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ২০১১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিপিসি বা বিপণন কম্পানি প্রতিনিধি ছাড়া ভোক্তা অধিদপ্তর, বিএসটিআইয়ের অভিযান এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা যাবে না। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কারচুপি রোধে নিয়মিত মনিটরিংয়ের জন্য অনতিবিলম্বে তেল কম্পানি, বিএসটিআই এবং অ্যাসোসিয়েশন প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত মনিটরিং সেলের কার্যক্রম শুরু করতে হবে।
৩. বিপিসি, বিপণন কম্পানি এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয় ছাড়া অন্য কোনো দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান পাম্পের কাগজপত্র চেক করার নামে পাম্প মালিকদের হয়রানি করতে পারবে না। পাম্প পরিদর্শনকালে সঠিক ও ভুল উভয় তথ্য লিপিবদ্ধ এবং প্রচার করতে হবে। তার কপি মালিককে সরবরাহ করা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৪. সওজ (সড়ক ও জনপথ) অধিদপ্তরের ইজারা মাসুল যৌক্তিক হারে নির্ধারণ করতে হবে। বিপিসি, বিপণন কম্পানি এবং বিএসটিআই ও অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত যৌথ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাম্পের আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যাংক ক্যালিবারেশন (যার সঙ্গে ভোক্তার কোনো স্বার্থ জড়িত নেই) সার্টিফিকেট নবায়ন প্রথা বাতিল করতে হবে।
৫. জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ২০১১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারির সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাস্তায় ট্যাংক-লরির কাগজপত্র চেকিংয়ের নামে ট্যাংক-লরি চালককে পুলিশের হয়রানি করা যাবে না। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ট্যাংক-লরির কাগজপত্র ডিপো গেটে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে এবং মন্ত্রণালয়ের ২০১৬ সালের ৩ অক্টোবরের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সব ডিপোতে পার্কিং স্ট্যান্ড নির্মাণ করতে হবে। ট্যাংক-লরি চালকদের জন্য বিআরটিএ কর্তৃক আলাদা কাউন্টার করার সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। শোধনাগার সুবিধা সমন্বিত বিভিন্ন গ্যাসফিল্ডের শোধনাগার পূর্বের ন্যায় চালু করতে হবে।
Be the first to comment